করোনার ভারতীয় ধরন উদ্বেগজনক: ডব্লিউএইচও

করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরনকে ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল সোমবার (১০ মে) ডব্লিউএইচওর জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মারিয়া ভান কোরকেভ এ তথ্য জানান।

মারিয়া ভান বলেন, প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে ভারতে শনাক্ত হওয়া বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা বেশি। এ কারণে, করোনার এই ধরনকে আমরা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের বলে বিবেচনা করছি।

তিনি জানান, ভারত ভ্যারিয়েন্ট এবং এর তিনটি সাব টাইপের বিষয়ে আরও তথ্য মঙ্গলবার পাওয়া যাবে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের এই ধরনটির অতি সংক্রামক হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে বলে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে।

প্রায় দেড় বছর আগে মানুষে সংক্রমিত হওয়া নতুন করোনা ভাইরাস রূপ বদল করে চলছে। এর মধ্যে গত বছর ভারতে এর যে পরিবর্তিত রূপ শনাক্ত হয়েছে, তার আনুষ্ঠানিক নাম বি.১.৬১৭ হলেও এটি ‘ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট’ নামেই পরিচিতি পেয়েছে।

প্রায় দুই ডজন দেশে পৌঁছেছে এই ধরনটি; এটার তিনটি ‘সাব টাইপ’র মধ্যে একটি বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে।

করোনা ভাইরাস মহামারিতে এখন বিপর্যস্ত ভারত। বিশ্বে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে দেশটিতে। এজন্য বি.১.৬১৭ কেই দায়ী করা হচ্ছে।

ডব্লিউএইচও বলছে, বি.১.৬১৭ ভারতে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। তার আগে অক্টোবরে দেখা মিলেছিল তার আগের রূপটি।

ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতিতে গত মাসে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। সতর্কবাণী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ভারতের রেকর্ড সংক্রমণ হৃদয়বিদারকের চেয়েও বেশি কিছু। এই সঙ্কট মোকাবিলায় দেশটির পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করছে ডব্লিউএইচও। এক ভাগে রয়েছে পর্যবেক্ষণে থাকা ভ্যারিয়েন্ট এবং উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট। পরের ভাগে পড়া ভ্যারিয়েন্টগুলো বেশি সংক্রামক এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কিংবা বেশি অসুস্থ করে তোলে।

মারিয়া ভান কোরকেভ বলেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে পরীক্ষা, ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন কম কার্যকর এমন কোনও প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

শুধু ভাইরাসের ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের সচেতনতার অভাবও ভারতে ব্যাপক সংক্রমণের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন ডব্লিউএইচও’র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। তিনি বলেন, ভারতে জমায়েত বেড়ে গিয়েছিল। মানুষের মাস্ক পরার ও অন্যান্য কোভিড বিধি মেনে চলার প্রবণতাও কমে গিয়েছিল। ফলে প্রথমে নিচের স্তরে অনেক দিন ধরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ধীরে ধীরে সেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে একটা সময় পরে তা হাতের বাইরে চলে যেতে পরে বলেও সতর্ক করেছেন ভারতীয় এই বিজ্ঞানী।

সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.