ড্র’তে ইতি টানল পাল্লেকেলের প্রথম টেস্ট

অবশেষে ড্রই হলো ক্যান্ডি টেস্ট। চতুর্থ দিন উইকেটহীন থাকার পর শ্রীলঙ্কা পঞ্চম দিন সকালে প্রথম সেশন শেষেই ১০৭ রানের লিড নিয়ে ঘোষণা করেছিল প্রথম ইনিংস। জবাবে চা বিরতিতে বৃষ্টির হানার আগে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করেছে ২ উইকেটে ১০০ রান। বৃষ্টির কারণে শেষ সেশনের খেলা পরিত্যক্ত হয়েছে।

অবশ্য এই ড্র টেস্টেও বাংলাদেশকে নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল একটু! লাকমালের বোলিংয়ে ২৭ রানেই সফরকারীরা হারিয়ে বসেছিল ২ উইকেট। বরাবরের মতো ব্যর্থ ছিলেন সাইফ। ফিরেছেন ১ রানে। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল শান্তও ফিরেছেন রানের খাতা না খুলেই! অবস্থা করুণ হতে পারতো ১১.৪ ওভারে তামিম ইকবাল আউট হলে। কিন্তু থার্ড আম্পায়ারের রিভিউয়ের কল্যাণে নট আউট হয়েছেন শেষ পর্যন্ত। পরে তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েই উবে গেছে সব শঙ্কা।

তবে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হলেও অতৃপ্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তামিম ইকবালকে। চা বিরতির পর বৃষ্টি না হলে যে পেয়ে যেতেন দশম সেঞ্চুরি! কিন্তু তৃতীয় সেশনে আর খেলা না গড়ানোয় ৭৪ রানে থেমে যেতে হয়েছে তাকে। সঙ্গী মুমিনুল টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করে অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে।

এর আগে নিষ্প্রাণ উইকেটের শেষ দিনের সকালটা সাফল্য নিয়েই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন উইকেটহীন থাকা বাংলাদেশের বোলাররা আলো ছড়িয়েছেন পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনে।

সকালে ১৫৩.৪ ওভারে সাফল্যের মুখ দেখেন তাসকিন। ভাঙেন বাংলাদেশের বিপক্ষে লঙ্কানদের গড়া রেকর্ড ৩৪৫ রানের সর্বোচ্চ জুটি। ফেরান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে। লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান ফিরেছেন ১৬৬ রানে। খেলেছেন ২৯১ বল। তাতে ছিল ২২টি চার।

এক ওভার বিরতি দিয়ে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান করুনারত্নেকেও ফেরান তাসকিন। তার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে নাজমুল শান্তর হাতে তালুবন্দি হন করুনারত্নে। এর ফলে ৪৩৭ বলে ২৪৪ রানে ফিরেছেন লঙ্কান অধিনায়ক। তাতে ছিল ২৬টি চার।

এর পর দ্রুত গতিতে রান তোলার কৌশল নিতে গিয়ে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। লঙ্কানদের আরও জুটি গড়ার আশায় জল ঢেলেছেন পেসার এবাদত হোসেন। নতুন নামা পাথুম নিসাঙ্কাকে গ্লাভসবন্দি করেছেন। এবাদতের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়েছিলেন লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু বাইরের বল খেলতে গিয়ে এজ হয়ে জমা পড়েছেন লিটন দাসের গ্লাভসে। নিসাঙ্কা ফিরেছেন ১২ রানে।

দিকবিলা ও হাসারাঙ্গা মিলে সকালের ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যদিও। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে দিকবিলা রান আউটে ফিরলে ভাঙে এই জুটিও। দিকবিলা ফিরে যান ৩১ রানে।

এর পরেও স্কোরবোর্ডে রান তুলতে সমস্যা হয়নি লঙ্কানদের। লাঞ্চ বিরতির আগে সুরাঙ্গা লাকমাল ও হাসারাঙ্গা মিলে ৬২ রানের জুটি গড়েন। মধ্যাহ্ন ভোজনের একটু আগেই লঙ্কানদের গুরুত্বপূর্ণ এই জুটি ভাঙেন তাইজুল। তার ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৪৩ রান করা হাসারাঙ্গা। এর পর ৮ উইকেটে ৬৪৮ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েই প্রথম ইনিংস ঘোষণা শ্রীলঙ্কা।

বাংলাদেশের হয়ে ভালো বোলিংয়ের নজির রেখে ১১২ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। দুটি নিয়েছেন স্পিনার তাইজুল। একটি করে নিয়েছেন এবাদত ও মিরাজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫৪১/৭ ডি. (তামিম ৯০, শান্ত ১৬৩ ও মুমিনুল ১২৭; ফার্নান্দো ৪/৯৬) ও ১০০/২ (তামিম ৭৪*; লাকমাল ২/২১)

শ্রীলঙ্কা: ৬৪৮/৮ ডি. (করুনারত্নে ২৪৪, ধনাঞ্জয়া ১৬৬; তাসকিন ৩/১১২)।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.