দেশে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত

দেশে এবার করোনা ভাইরাসের নাইজেরিয়ার ভ্যারিয়েন্টের (বি.১.৫২৫) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মার্চ ও এপ্রিল মাসের সংগ্রহ করা নমুনার সিকোয়েন্সিং করে এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পেয়েছেন দেশের গবেষকরা।

করোনা ভাইরাসের জিনোমের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিসএআইডি) ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে করোনার এ ধরন শনাক্তের খবর প্রকাশিত হয়েছে।

দেশে করোনার এ ধরন পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা।

জিসএআইডির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অন্তত আটজনের নমুনায় নাইজেরিয়ার ধরনটি পাওয়া গেছে। ঢাকার সাতজন এবং সুনামগঞ্জের একজনের দেহে এ ধরন পাওয়া গেছে। গত মার্চ ও এপ্রিলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ আট নমুনার মধ্যে ছয়টি বিসিএসআইআরের, একটি ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ এবং আরেকটি চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরীক্ষাগারে শনাক্ত হয়েছে।

নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রসঙ্গে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর ড. মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, যেকোনো সংক্রামক ব্যাধি এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে পারে। তার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পদক্ষেপগুলো জোর দিয়ে অনুসরণ করতে হবে। বিশেষ করে বন্দরগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, সংক্রমণ নিয়ে আসতে পারে এমন লোকদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা এবং স্থল, নৌ, বিমানবন্দরগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। দেশের ভেতরে যদি সংক্রমণ হয়, সেটা শনাক্তকরণের ব্যবস্থা রাখা, সেগুলোর সার্ভিলেন্সের ব্যবস্থা রাখা, এগুলো জোর দিয়ে করতে হবে।

এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কানাডার সিনিয়র পলিসি বিশ্লেষক ডা. শাহরিয়ার রোজেন বলেন, নাইজেরিয়ার ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে এখনও ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন বলা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। একই সঙ্গে এই ভ্যারিয়েন্টের আক্রান্তদের মাঝে মৃত্যুহারও বেশি। এটি নিয়ে যেহেতু গবেষণা চলছে, অবশ্যই এর প্রভাব বোঝা যাবে।

প্রসঙ্গত, নাইজেরিয়ার এই ভ্যারিয়েন্টের সর্ব প্রথম উপস্থিতি পাওয়া যায় যুক্তরাজ্যে। পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ নাইজেরিয়ায় এটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে। ২৪ ফেব্রুয়ারির দিকে যুক্তরাজ্যে ৫৬টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ডেনমার্কে ১৪ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১৩টি নমুনা সিকোয়েন্সিং করে এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এর মধ্যে সাতটি নমুনা পাওয়া যায় সরাসরি নাইজেরিয়া থেকে আসা ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.