এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ফের সংঘর্ষ, এবার নিহত ৫ জন

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আবারও বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আর এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। শনিবার  (১৭ এপ্রিল) সকালে এই সংঘর্ষ ঘটে।

এর আগে ২০১৬ সালের এপ্রিলেও এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বড় সংঘর্ষ ঘটেছিল। তাতে ৪ গ্রামবাসী নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন।

এ নিয়ে বিতর্কিত ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে ৯ মন মানুষ খুন হয়েছেন।

জানা গেছে, গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে শনিবার বেলা ১১টার দিকে সংঘর্ষের ওই ঘটনা ঘটে। বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বেশ কিছু দাবিতে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা শনিবার সকাল থেকে আন্দোলন করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সেখান গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শফিউর রহমান মজুমদার জানান, সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে সকালে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ চারজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

আহত ১২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম মেডিক্যালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, সেখানে আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন, আহমদ রেজা, রনি হোসেন, মো. শুভ, মো. রাহাত ও মো. রায়হান।

বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ও চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো ও এইচটিজির মধ্যে চুক্তি হয়। চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে। তারা বলে, এতে গ্রামের পরিবেশ দূষিত হবে। তাদের চাষের জমি নষ্ট হলে জীবিকা হুমকীর মুখে পড়বে। গ্রামবাসীদের একটি অংশ জোর করে জমি দখলেও অভিযোগ তুলেন এসএলম গ্রুপের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে এসএলম গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় আরেকটি পক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মাঠে নামে। এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। এ ঘটনার পাঁচ বছর পর আবারও রণক্ষেত্র হলো বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা।

এদিকে এসআলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রে এভাবে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক হত্যার নিন্দা জানিয়ে ৬৮ জন বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দিয়েছেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.