পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে চতুর্থ দফার ভোট চলছে

বিধানসভা নির্বাচনে আজ শনিবার (১০ এপ্রিল) চতুর্থ দফায় ভোট শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলার ৪৪টি কেন্দ্রে। কড়া নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে কেন্দ্রগুলোতে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার নয় এবং আলিপুরদুয়ারের পাঁচটি বিধানসভা আসনের সবগুলোতেই ভোটগ্রহণ চলছে। এছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১টি, হাওড়া জেলার ১৬টির মধ্যে নয়টি এবং হুগলির ১৮টির মধ্যে ১০টি আসনেও ভোট হচ্ছে।

এর আগে প্রথম দফায় গত ২৭ মার্চ ৩০টি, দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ৩০টি এবং তৃতীয় দফায় ৬ এপ্রিল ৩১টি আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে। আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভোট হচ্ছে। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আধিপত্য রয়েছে। আর হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য রয়েছে। তৃণমূল চাইছে তাদের সাবেক আসনগুলো ধরে রাখতে। বিজেপি চাইছে তৃণমূলের ধরে রাখা আসনে ভাগ বসাতে।

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে। ৪৪টি নির্বাচনী এলাকার ভোটকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ভোট নেওয়া হচ্ছে ১৫ হাজার ৯৪০টি কেন্দ্রে। এর মধ্যে স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্র ৫ হাজার ৮৭১টি। ভোটার ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৪ হাজার ৬৮২ জন। প্রার্থী ৩৩৯ জন। ভোটকেন্দ্র এলাকায় ৮৫৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ১৩৩ জন পুলিশ সদস্য।

আজ মমতার ক্ষমতায় আসার প্রধান সোপান সিঙ্গুর বিধানসভা আসনের লড়াই হচ্ছে। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের জমি অধিগ্রহণবিরোধী আন্দোলনের পথ বেয়ে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন মমতা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। এবার সিঙ্গুরে লড়াই হচ্ছে বিজেপির মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে তারই শিষ্য বেচারাম মান্নার।

চতুর্থ দফার এ ভোটে রয়েছে আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা আসন। রয়েছেন একঝাঁক তারকা প্রার্থীও। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রথীন চক্রবর্তী এবং বৈশালী ডালমিয়ারও শনিবার পরীক্ষা।

ডোমজুড়ে প্রার্থী রাজীব। বালিতে বৈশালী এবং সাবেক মেয়র রথীন প্রার্থী শিবপুরে। এ ছাড়াও রয়েছেন, সিঙ্গুরে বিজেপির প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, চুঁচুড়ায় বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়, চন্দননগরে তৃণমূলের প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন, উত্তরপাড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক এবং বিজেপির প্রবীর ঘোষাল।

বেহালা পূর্বে তৃণমূলের প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং বিজেপির প্রার্থী পায়েল সরকার। বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপির শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এই ৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ছিল ৩৯টি। বিজেপির হাতে মাত্র ১টি এবং বামদের দখলে ৩টি আসন। আর তাদের জোট শরিক কংগ্রেসের ঝুলিতে ১টি আসন ছিল। অবশ্য ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের হিসাব অনেক বদলে গেছে। এই ৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৫টি এবং বিজেপি ১৯টি কেন্দ্রে এগিয়ে। তবে সেসময় পৃথকভাবে লড়াই করা বাম-কংগ্রেসের হাতে কোনো আসনই নেই।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.