আওয়ামী লীগকে সরাতে দুইটা শক্তি দরকার: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার পরিবর্তন করতে হলে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে হলে প্রধান দুইটা শক্তি দরকার। একটা হচ্ছে ছাত্র সংগঠন, আরেকটি শ্রমিক সংগঠন।

তিনি বলেন, সংগঠন গড়ে না তুললে আন্দোলন কিভাবে হবে? সেই সংগঠন তো আমরা সেভাবে গড়ে তুলতে পারছি না। সেটা তো আমাদের ব্যর্থতা। সেই কারণে আমি অনুরোধ করবো আসুন আমরা সবাই পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করি, কথা বলি কিভাবে সংগঠনগুলোকে আবার গড়ে তোলা যায় সেই চেষ্টা করি।

আজ মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য প্রয়াত জাফরুল হাসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দলের অনেক কষ্ট, অনেক দুঃসময়। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। আমাদের প্রধান যিনি আমাদের নেতৃত্ব দেন, যার কথায় আমরা অনুপ্রাণিত হই, আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি- সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিন বছর ধরে কারাগারে। এটা ভাবা যায় না, কল্পনা করা যায় না।

করোনাকালে শ্রমিকদের সহায়তার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই করোনাকালে অবশ্যই শ্রমিকদেরকে সাবসিডি দিতে হবে। প্রত্যেক শ্রমিক নেতা, শ্রমিক কর্মী ভাই যারা আছেন তাদেরকে অবশ্যই সরকারের তরফ থেকে ত্রাণ সহযোগিতা করতে হবে। এই মুহুর্তে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় দাবি। আমরা এই দাবিটা আজকে করছি যে, দেশে ইনফরমাল সেক্টরে যত শ্রমিক আছেন, আমাদের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে যত শ্রমিক আছেন, অন্যান্য কলকারখানার সাথে যেসব শ্রমিক যুক্ত আছেন তাদের প্রত্যেককে মাসের একটা অনুদান অবশ্যই দিতে হবে যেটা অন্যান্যদেরকে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাকালে শুধুমাত্র মালিকদেরকে দিলেই হবে না, শুধুমাত্র ব্যাংক থেকে ঋণ দিলেই হবে না। আমি লন্ডনে আমার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম সে একটা ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। সে আমাকে বলছে যে, আমি এখন খুব ভালো অবস্থায় আছি। লকডাউনে ভালো কিভাবে? সে বলছে যে, সরকার আমাকে দিচ্ছে ১৫০০ পাউন্ড করে। এটাকেই বলে ওয়েল ফেয়ার স্টেট, এটাকে বলে মানুষের জন্য ভালোবাসা, কমিটমেন্ট টু দি পিপল। আসুন আমরা এই আন্দোলনটা গড়ে তুলি শ্রমিকদের নিয়ে যে, আজকে এই সময়ে তাদের ইনসেনটিভ দিতে হবে, তাদের ত্রাণ দিতে হবে, তাদের সহযোগিতা দিতে হবে।

জাফরুল হাসানের কর্মময় জীবনের কথা তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেখুন, গ্রোথ হচ্ছে মালিকদের, তারা গাড়ি কিনছেন, বাড়ি কিনছেন, বিদেশে প্রপার্টি তৈরি করছেন। আর আমার শ্রমিক ভাইয়েরা, বোনেরা তারা বস্তিতে একটা ঝুপড়ির মধ্যে বাস করেছে, দুইবেলা ঠিক মতো তারা খেতেও পায় না। এটাই বাস্তবতা। কেউ কথাও বলছি না এই বিষয়ে। কিছুদিন আগে জাফরুল ভাই চলে গেছেন। আমার বার বার তার কথা মনে পড়ে এজন্য যে সত্যিকার অর্থে আজকাল এই ধরনের নেতা আর কোথায়? এক নজরুল ভাই (নজরুল ইসলাম খান) আছেন বাতি জ্বালিয়ে, আর তো আমি দেখতে পাই না। কারণ কোথায় কে জোরেশোরে কথা বলবেন, কার কথায় উজ্জীবিত হবে-এ বিষয়ে বোধহয় শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যারা জড়িত আছেন, শ্রমিক রাজনীতির সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের এই বিষয়গুলো দেখা উচিত।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.