গ্রামীণ উন্নয়নে এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন উদ্যোগ

কার্যক্রমের ৮ বছর পার করে ৯ম বছরে পা দিয়েছে চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক। এনআরবিসি ব্যাংকের স্বপ্ন ৯ম বছরের ‘উন্নয়নে হবো অংশীদার মাটি ও মানুষের’ শীর্ষক শ্লোগানে ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে ব্যাংকটি।

গ্রামের উন্নয়নে সর্বপ্রথম উপশাখা ব্যাংকিং শুরু করে ব্যাংকটি। আবার জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করতে সমসাময়িকদের তুলনায় সবার আগে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয়ে লেনদেন শুরু করেছে।

ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, গ্রামীণ উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় যে নীতি সেটিকে মূলনীতি ধরে ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক ও সেবার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী  ও মুজিব শতবর্ষে উপলক্ষে আগামী এক বছরে আমাদের মূল লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া মানুষের প্রয়োজন মেটাতে তাদের পাশে হাজির হওয়া।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মুখতার হোসেন বলেন, অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, উদ্যোক্তা, শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ব্যাংকটি গত ৮ বছর মানুষের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিচালিত হয়েছে। করোনার সময় মানুষের পাশে থেকে ‘মানবিক ব্যাংক’ উপাধি পেয়েছে। নতুন বছরের পথ চলায় আমরা থাকবো মানুষের উন্নয়নে, কাজ করে যাবো রাষ্ট্রের কল্যাণে। স্বাধীনতা ৫০ বছরে আমাদের ব্যাংকিং সেবার লক্ষ্য প্রান্তজনের অর্থনৈতিক মুক্তি।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, এই ব্যাংকের সকল উদ্যোক্তা প্রবাসী। আমাদের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কিছু করা। এটি করতে আমি মনে করি সফল হয়েছি। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আমাদের সফলতার গতি কাঙিক্ষত মাত্রায় বাড়াতে পারেনি। এরমধ্যে এনআরবিসি ব্যাংক ৩টি রেকর্ড করেছে। করোনাভাইরাসের তীব্র সংক্রমণের মধ্যে শতভাগ ব্যাংকিং সেবা এবং বাড়তি চিকিৎসা সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে পেরেছে কার্যকরভাবে। আর সংকটের বছরে আমরা পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয়েছি। একযুগ পর প্রথম কোন ব্যাংক বাজারে লেনদেনে অন্তর্ভুক্ত হলো। গ্রামাঞ্চলে উপশাখা খোলার ক্ষেত্রে সকল ব্যাংকের তুলনায় আমরা শীর্ষে। নতুন বছরে আমাদের স্বপ্ন গ্রামের মানুষের পুঁজির জোগান দেওয়া। তারা পুঁজি সংগ্রহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুদ দিতে বাধ্য হন এবং নানা জটিলতার মধ্যে পড়েন। আমরা এমন একটি অভিনব ব্যাংকিং প্রক্রিয়া শুরু করেছি যাতে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ নিতে পারছেন। আর প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে ব্যাংকিং সেবাকে সবার জন্য করছি আরো সহজ এবং উপযোগী।

সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে শতভাগ প্রবাসীদের মালিকানাধীন এনআরবিসি ব্যাংক। বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় ওই বছরের ১৮ এপ্রিল। পথচলার এই আট বছরে ব্যাংকটি সারাদেশে ৮৩টি শাখা খুলেছে, যার অর্ধেকই গ্রামে। আর মানুষের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই ব্যাংকটি নিয়ে আসে উপশাখা ব্যাংকিংয়ের ধারণা। এটি পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন দেয় এবং স্বল্প খরচের এই সেবাকেন্দ্র ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

এনআরবিসি ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ৪২৩ উপশাখা খুলেছে। খোলা হয়েছে ৫৮৯টি এজেন্ট ব্যাংকিং বুথ। এসবের অধিকাংশই গ্রামের এলাকায়। এখন গ্রামের উন্নয়নের নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। এই উদ্যোগের লক্ষ্য গ্রামে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। গ্রামের মানুষদেরকে স্বল্প সুদে পুঁজির যোগান দেওয়া।

সর্বশেষ হিসেবে ২০২১ সালের মার্চ শেষে ব্যাংকটির সংগৃহীত আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে ৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। আট বছরের পথচলায় ব্যাংকটির সেবাগ্রহীতার সংখ্যা এখন ৬ লাখেরও বেশি। এর বাইরে প্রতিদিন সারাদেশের ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস ও বিআরটিএ অফিসে স্থাপিত উপশাখা ও বুথ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেবা নিচ্ছেন।

অর্থসূচক/আরএ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.