‘সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়া হবে না’

দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো প্রেতাত্মাদের বাংলাদেশে কোনভাবেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একটা চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে আছে। এর মধ্যেও সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় আক্রমণ হয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং এদের পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক দল ও জোট এর পেছনে জড়িত থাকতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, কোনভাবেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে, রাম-রহিমের বাংলাদেশে, ত্রিশ লক্ষ শহিদের বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, সে ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হবে। কঠোরভাবে তাদের দমন করা হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বর্বর পাকিস্তানী এবং এদেশীয় দোসররা নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় তারা। সেজন্য ইতিহাসে ২৫ মার্চ একটা বর্বরোচিত কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এ নির্মম ঘটনা যারা সংগঠিত করেছিল তাদের দোসর এদেশীয় একটি শ্রেণি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পুনর্বাসিত হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুপ্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। এমনকি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রাজনীতিতে ও সরকারে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। এভাবেই পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলো বাংলাদেশকে কার্যত পূর্ব পাকিস্তানে পরিণত করার ব্যবস্থা করেছিল।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, ২৫ মার্চ নতুন নয়। অথচ ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে ২০১৭ সালে। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ শেখ হাসিনা সরকার আমলে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অতীতে কেউ এটি করেনি। কারণ ২৫ মার্চের গণহত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের উত্তরসূরিরা বাংলাদেশের প্রশাসনে, রাষ্ট্র ক্ষমতায়, রাজনীতিতে রয়ে গেছে। এজন্য ২৫ মার্চকে আনুষ্ঠানিকভাবে অতীতের সরকারগুলো পালন করেনি।

মন্ত্রী আরও বলেন, এ মূহুর্তেও দেশে ষড়যন্ত্র চলছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বিষোদগার করা হচ্ছে। আবার এক শ্রেণির মৌলবাদীরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী না আসার জন্য বিক্ষোভ করার ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে বিদেশি অতিথিরা এসে বাংলাদেশকে সম্মানিত করবেন, সেক্ষেত্রেও বিএনপি বাধা দিচ্ছে। ভারতবিরোধী রাজনীতির একটা ট্রাম্পকার্ড ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করছেন। তারা ভুলে গেছেন বাংলাদেশে এ রাজনীতির ট্রাম্পকার্ড এখন চলে না।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম, সিভিল সার্জন হাসনাত ইউসুফ জাকি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.