ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ বাড়ল

করোনা পরিস্থিতির কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মেয়াদে চলমান ঋণের ক্ষেত্রে গত বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) আরোপিত সুদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত দিতে পারবে। এ জন্য চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ছয়টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে। আর তলবি প্রকৃতির ঋণের ক্ষেত্রে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আটটি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে।

আজ বুধবার (২৪ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে দেশের কার্যরত সকল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের নিকট পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বহির্বিশ্বেও নেতিবাচক প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় রফতানি বাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

করোনা ভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলা এবং ব্যাংকিং গতিধারা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে চলমান ও তলবি প্রকৃতির ঋণ পরিশোধের জন্য এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আরোপিত সুদ (অনাদায়ী থাকলে) ২০২২ সালের জুনের মধ্যে ছয়টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে। এছাড়া ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত আরোপিত সুদ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হলে গ্রাহকের নেওয়া ঋণ বা বিনিয়োগ ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে না।

এতে আরও বলা হয়, তলবী প্রকৃতির ঋণ বা বিনিয়োগসমূহ চলতি বছরের মার্চ হতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আটটি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধিত হলে হলে ওই ঋণ শ্রেণিকরণ করা যাবে না।

উল্লিখিত নিয়মে কোন ত্রৈমাসিকে প্রদেয় কিস্তি পরিশোধিত না হলে ওই ত্রৈমাসিক হতে এ সুবিধা বাতিল হিসেবে গণ্য হবে এবং যথানিয়মে ঋণ বা বিনিয়োগ শ্রেণিকরণ করতে হবে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়। তবে উল্লিখিত চলমান ও তলবী ঋণসহ মেয়াদী ঋণের বিপরীতে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তি ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওই সময়ে ঋণ বা বিনিয়োগসমূহ বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না।

এছাড়া অন্যান্য ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা এবং বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রণোদনা প্যাকেজের নীতিমালা অনুসরণীয় হবে বলে সার্কুলারে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, করোনায় সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণগ্রহীতাদের চাপ কমাতে গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধের ওপর বিশেষ ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে গত এক বছর কিস্তি না দিলেও কোনও গ্রাহক খেলাপি হননি। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ ছাড় তুলে নেওয়া হয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে জারি করা নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে, ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করার লক্ষ্যে ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে বিদ্যমান অশ্রেণিকৃত ঋণগ্রহীতার ওপর কোভিড-১৯-এর প্রভাব এবং ঋণের বকেয়া স্থিতির পরিমাণ বিবেচনায় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে শুধু মেয়াদি ঋণ হিসাবের অবশিষ্ট মেয়াদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সময় বৃদ্ধি করা যাবে। তবে এরূপ বর্ধিত সময়সীমা কোনোভাবেই দুই বছরের বেশি হবে না।

অর্থসূচক/এনএইচ/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.