মিয়ানমারে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, দমন-পীড়ন বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের

দিন যত গড়াচ্ছে ততই বেগবান হচ্ছে মিয়ানমারে গণগন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ। একইসঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। নিরাপত্তা বাহিনী সোমবারও গুলি চালিয়েছে। এ দিনও ২০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল রোববার। এ দিন বিক্ষোভের মধ্যে মোট ৭৪ জন নিহত হয়েছেন।

অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। এএপিপির ভাষ্য, রোববার প্রথমে ৪২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এরপর আরও ৩২ জন নিহত হন বলে খবর মিলে। সবমিলে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৪ জনে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের পশ্চিমাঞ্চলে।

এদিকে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে বেসামরিক নাগরিকদের এই অব্যাহত প্রাণহানিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সোমবার জাতিসংঘের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এবং দ্বিপক্ষীয় চেষ্টার মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এ দমন-পীড়ন বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব।

বিক্ষোভকারীরা রোববার চীনা অর্থায়নে পরিচালিত অনেকগুলো কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ইয়াঙ্গুনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হ্লাইং থারিয়ার ও আরও কয়েকটি জেলা এবং মান্দালয়ের একাংশে সামরিক আইন জারি করে। রয়টার্স বলছে, কর্তৃপক্ষের সব ধরনের দমন-পীড়ন অগ্রাহ্য করেই সোমবার আবার জান্তাবিরোধী প্রতিবাদে নামেন গণতন্ত্রপন্থীরা।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকেও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমনে দিন দিন আরও সহিংস হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্প্রদায়ও। তবে রোববার ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর চীনের দিক থেকেও কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে।

চীনা সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস বলছে, মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানা ‘ভয়াবহ হামলায় লণ্ডভণ্ড’ হয়ে গেছে। এতে তিন কোটি ৭০ লাখ ডলারের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুই চীনা কর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে তারা। এরপর চীনের দূতাবাস মিয়ানমারের জেনারেলদের সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স, ইরাবতী।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.