যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বিমানের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

নতুন ক্রয়কৃত বিমানগুলোর সুন্দর সুরক্ষা ও মানসম্মত যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমাদের যাত্রীসেবা আরও উন্নত করতে হবে। বিমান বা এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে আমি আহ্বান করব, এটা আমাদের দেশ। লাখো শহীদের রক্তে এদেশ স্বাধীন করেছি। এদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা সকলেরই অপরিহার্য, সকলেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আজ রোববার (১৪ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য নতুন কেনা ড্যাশ-৮কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ ‘আকাশতরী’ ও ‘শ্বেতবলাকা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যখন সারা বিশ্বে ঘোরে, বিদেশে যখন যায় তখন বাংলাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব করে। সেজন্য সব সময় আমাদের প্রচেষ্টা ছিল যে এই বিমান যেন ভালোভাবে, সুন্দরভাবে আমরা গড়তে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের যাত্রীসেবাটা আরও উন্নত করতে হবে। ২১টি জাহাজ আছে, সেগুলো যেন সুন্দরভাবে সুরক্ষিত থাকে। যাত্রীসেবার মান যেন উন্নত হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য আপনাদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্চ মাস আমাদের অর্জনের মাস। আমাদের মহান স্বাধীনতার মাস। বাঙালি জাতির জীবনে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসে বিমান বহরে দুটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ উদ্বোধন হচ্ছে। জাতির পিতা বিমানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। বিমানের পাশাপাশি ডিপার্টমেন্ট অব সিভিল এভিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

৭৫ এর ১৫ আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবনে কলঙ্কময় অধ্যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে শুধু হত্যা না, ২১টি বছর এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। আমাদের বিমানগুলোর কী যে দুর্দশা ছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে এসে আমরা চেষ্টা করেছি বিমানবন্দরের উন্নয়ন করার। বিমানবন্দরের কোনও বোডিং ব্রিজ ছিলে না। যতটুকু উন্নতি, ভিত্তিটা আমরাই করে দিয়ে যাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উড়োজাহাজ শুধু আমাদের দেশ তো না, সারা বিশ্বে যখন ঘুরে বাংলাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব করে। সেজন্য সব সময় প্রচেষ্টা ছিল বিমান যেন ভালোভাবে গড়তে পারি।

সরকার প্রধান বলেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি, তারপর থেকে ১২টি উড়োজাহাজ সংগ্রহ করে দিয়েছি। সব আধুনিক, কোনও ভাঙাচোরা পুরাতন না, সম্পূর্ণ নতুন। আমার বিমান নিয়ে এসেছি এয়ারলাইন্সকে উন্নত করার জন্য। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য করোনা ভাইরাস এসে আমাদের সব সুযোগগুলো নষ্ট করে দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে কাজ শুরু করে দিয়েছি। শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আমরা তৈরি করে দিচ্ছি— একটা আধুনিক টার্মিনাল আমরা করে দিচ্ছি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া সবশেষ দু’টি উড়োজাহাজ হলো অত্যাধুনিক ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের দুই প্লেন ‘আকাশতরী’ ও ‘শ্বেতবলাকা’। এই দু’টি যুক্ত হওয়ার ফলে বিমানের প্লেনের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১টি। যা বাংলাদেশের কোনো এয়ারলাইন্সের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে কেনা তিনটি উড়োজাহাজের মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিমানের অন্য উড়োজাহাজের মতো এই উড়োজাহাজ দু’টিরও নাম রাখেন।

কানাডার বিখ্যাত এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত অত্যাধুনিক ৭৪ আসন সম্বলিত নতুন ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ। ড্যাশ-৮ প্লেনটি খুব ছোট রানওয়ে থেকে উড্ডয়নে সক্ষম ও স্বল্প খরচে নিরবচ্ছিন্ন ও মসৃণ উড্ডয়নের জন্য বিখ্যাত। এই মডেলের বিমানগুলোতে কেবিন নয়েজ সাপ্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

প্লেন দু’টি উদ্বোধন উপলক্ষে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি ভবনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মন্ত্রণালয়ের সচিব এম মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামালসহ মন্ত্রণালয় ও বিমানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.