বরকত-রুবেলের সম্পদের হিসাব আজগুবি, দাবি স্বজনদের

ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের অর্থ পাচারের মামলাকে ‘অতিরঞ্জিত’ উল্লেখ করে স্বজনদের অভিযোগ, বরকত ও রুবেল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার।

তারা দাবি করেন, ‘আজগুবি’ সম্পদের হিসাব দেখিয়ে দুই হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার মামলায় বরকত-রুবেলকে ফাঁসানো হয়েছে।

আজ শনিবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বরকত ও রুবেলের স্বজনেরা। সেখানে তারা বরকত ও রুবেলের বৈধ সম্পদের বিস্তারিত ও ষড়যন্ত্রের উদাহরণ তুলে ধরেন। তারা এ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বরকত ও রুবেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।

সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি। গত ২৬ জুন সিআইডি এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জন ও পাচারের অভিযোগে মামলা করে।

এদিকে দুদক সূত্র জানায়, ফরিদপুর সদরের দুই ভাই বরকত ও রুবেলের ছোট ব্যবসা ও ছোট চাকরি দিয়ে জীবন শুরু হলেও বরকত রাজনীতিতে পা রাখার পর থেকে তাদের জীবন পাল্টে যায়। অর্থসম্পদ বাড়তে থাকে হুহু করে। সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর সদর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে রুবেল ছিলেন তার ডান হাত। এলাকার মানুষের কাছে তারা ছিলেন ত্রাস।

জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে গত বছরের জুনে দুই ভাইকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে। বর্তমানে তারা জেলে আছেন।

দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, বরকত ১৯৯২ সালে এসএসসি পাস করার পর এইচএসসি পড়তে কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে এইচএসসি পাস করা হয়নি। তার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম কুয়েতে চাকরি করতেন। বর্তমানে পৈতৃক বাড়িতে থাকেন। ছোট ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল স্নাতক পাস করেছেন। সবার ছোট ভাই ইমতিয়াজ হাসান জুয়েল ফরিদপুর কৃষি কলেজে শিক্ষকতা করেন।

বরকত লেখাপড়া বাদ দিয়ে ফরিদপুর শহরে রড-সিমেন্টের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। এই ব্যবসার পাশাপাশি ঠিকাদারি কাজ শুরু করেন। পরে ২০১০-১১ সালে তিনি নিজ নামে এস বি ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। পরে এসবিসিইএল, বরকত এগ্রো লিমিটেড ও সাউথ লাইন পরিবহন চালু করেন। ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে তার নামে থাকা জমির ২২০টি দলিল রয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এ ছাড়া মাদকের কারবার ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন রুবেলের মেয়ে যাওয়াতা আফনান রাদিয়া। এ সময় রুবেলের ছেলে আদিয়াত হাসান রাফিম ও বরকতের মেয়ে ইসরাত জাহান আদ্রিতি উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.