একরামের বাড়িতে বসে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে: কাদের মির্জা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই ও নোয়াখালীর বসুরহাটের আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেছেন, আমাকে হত্যার জন্য গতকালও (শুক্রবার) একরাম চৌধুরীর বাড়িতে মিটিং হয়েছে। আমি এবং আমার কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। এখন এ বিষয়ে প্রশাসন, সরকার কী পদক্ষেপ নেবে সেটা উনাদের বিষয়। তবে যতক্ষণ দেহে একফোটা রক্ত আছে আমি এখান থেকে সরবো না।

আজ শনিবার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বসুরহাট পৌরসভার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তিনি।

কাদের মির্জা বলেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম একজন মেরুদণ্ডহীন প্রাণি। তার কারণে একরাম চৌধুরী আকাম-কুকাম করছেন। দুর্নীতি ও অনিয়ম করে একরাম টাকা বেশি খান, আর সেলিম কম হলেও খান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, শুক্রবার রাতে পুলিশ আমার দলের নিরীহ ৮ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সারা রাত ডিবি পুলিশ, অন্যান্য বাহিনী আমার নেতাকর্মীদের প্রত্যকের বাড়িতে হানা দিচ্ছে এবং নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের আত্মীয়-স্বজনদের মারধর করছে।

কাদের মির্জা বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে নির্বিচারে প্রতিপক্ষ আমার পৌরসভা কার্যালয়ে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ করে। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৫০০ গুলি ছুড়েছে। এসময় আমি শুয়ে প্রাণে রক্ষা পাই। তবে আমার সঙ্গে থাকা দলীয় কর্মীরা গুলিবিদ্ধ হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীকে দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ সহিংসতার ঘটনায় তদন্ত চাই। এছাড়াও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে এ সমস্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।

কাদের মির্জা বলেন, আমি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ইভিএমে কাস্টিং ভোটের ৭৭ ভাগ ভোট পেয়েছি। এই জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাম্বিত হয়ে প্রতিপক্ষরা নিজাম হাজারি ও একরাম চৌধুরীর সঙ্গে এক হয়ে আমার বিরোধিতা করছে।

নতুন করে কোন কর্মসূচি দেওয়া হবে কি-না এ প্রশ্নে কাদের মির্জা বলেন, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি আর কোনো কর্মসূচি দেব না।

প্রসঙ্গত, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গুলিবিদ্ধ হয়ে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নিহত হন। এরপর গত ৯ মার্চ রাতে বসুরহাট পৌরভবনের পাশে আবারও ওই দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আলা উদ্দিন নামের আরেকজন সিএনজিচালক নিহত হন।

আওয়ামী লীগের বিবাদমান এই দুই গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই পৌরমেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.