ট্রেনে নারীর জন্য কামরা বরাদ্দে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট

নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের নিরাপদে রেল ভ্রমণের জন্য যাত্রীবাহী ট্রেনে আসন বরাদ্দের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (১০ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ও রেলওয়ে পরিদর্শককে এই রুলের জবাব দিতে হয়েছে।

রেলওয়ে আইনের ৬৪ ও ১১৯ ধারা বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মমতাজ পারভীন। এরপর রিটকারী ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি সম্পূরক আবেদন করেন। এসবের ওপর শুনানি নিয়ে আজ রুল দেওয়া হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজমল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনের ৬৪ ধারা অনুসারে প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কামরা থাকার কথা। ৫০ মাইলের বেশি ভ্রমণকারী ট্রেনের ক্ষেত্রে ওই কামরার সঙ্গে একটি শৌচাগার সংযুক্ত থাকবে বলা আছে। সেখানে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে জরিমানা আরোপের কথা উল্লেখ আছে ১১৯ ধারায়। ওই দুই ধারার বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষাপটে রিটটি করা হয়।

নারী যাত্রীদের জন্য ট্রেনে নির্দিষ্ট কামরা সংরক্ষণসংক্রান্ত আইনের ওই দুটি বিধান বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

রিটকারী এই আইনজীবী বলেন, রাতে কোনো নারী একা ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তাই নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ দিলে দিনে কিংবা রাতে নারীরা তাদের কামরায় নির্দ্বিধায় উঠে তাদের আসনে বসতে পারবেন। এতে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকিও কমবে। এছাড়া ট্রেনে ভ্রমণের সময় যদি নামাজের সময় হয়, তখন তারা নিয়মিত সেখানে নামাজও আদায় করতে পারবেন।

রিটকারী আইনজীবী আরো বলেন, প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য পৃথক একটি কামরার কথা বলা থাকলেও সেটি কোনো ট্রেনে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর আগে নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ চেয়ে ২০২০ সালে ১৩ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি (আইনি) লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। নোটিশে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন, ১৮৯০ এর ৬৪ ধারায় নারীদের জন্য একটি কামরা বরাদ্দ রাখার বিধান থাকলেও এখন পর্যন্ত আইনটি বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হলো।

নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। অন্যথায় বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে বলেও উল্লেখ করেন আজমল হোসেন। লিগ্যাল নোটিশের পরও কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাইকোর্টের প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করেন তিনি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.