বসুরহাটে ১৪৪ ধারা জারি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার পর বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

আজ (১০ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক মীর।

তিনি বলেন, সংঘর্ষ ও বিস্ফোরণের পর গুলিতে একজন নিহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবং ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ আদেশ চলাকালে পৌর এলাকায় ব্যক্তি, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, গণজমায়েত, সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পৌর শহরে চারজনের বেশি লোক জমায়েত হতে পারবে না।

গতকাল (৯ মার্চ) বিকেল থেকেই মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুরো বসুরহাট বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় অন্তত ১২ জন গুলিবিদ্ধ হন। সবমিলিয়ে আহত হন প্রায় ৫০ জন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে রাত ১০টার দিকে গুলিতে আলাউদ্দিন (৩২) নামের একজন নিহত হন। তিনি চরফকিরা ইউনিয়নের চরকালী গ্রামের মমিন উল্যাহর ছেলে। এছাড়া গুলিবিদ্ধদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন হৃদয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে। বাকি আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বসুরহাট থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি জানান, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১০-১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পৌরসভার দিক থেকে ছোড়া ইটের আঘাতে তিনিসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্বরে প্রতিবাদ সভা চলছিল। এ সময় দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক ও চার পুলিশ সদস্যসহ আহত হন সাতজন। রাতে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুইপক্ষ। এ সময় গোলাগুলি হয়। এতে আহত হন অর্ধশতাধিক।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জের চাপরাশিরহাট বাজারে আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের গোলাগুলিতে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় ২২ ফেব্রুয়ারি বসুরহাটে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। ওই ঘটনায় বিবদমান পক্ষ দুটি পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের নেতাদের কাউকে পুলিশ এখনও গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে খোঁজেনি।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.