ঢাকায় পরিকল্পনা, জেলায়-জেলায় সংঘবদ্ধ চুরি

রাজধানী ঢাকায় বসে ইজিবাইক চুরির পরিকল্পনা করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন জেলাকে টার্গেট করে চক্রটি বের হয়ে যায়। এরপর যাত্রীবেশে ইজিবাইকে ওঠে তারা। নির্জন এলাকায় পৌঁছে ইজিবাইকের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। চালক বাধা দিলে তাকে হত্যা করে ইজিবাইক নিয়ে যায় চক্রটি। পরে নিজেকে ছিনিয়ে নেওয়া ইজিবাইকের মালিক হিসাবে জাল দলিল বানিয়ে বিক্রি করে তারা।

এমনই একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ১১টায় নীলফামারীর চাপড়াসরমজানী ইউনিয়নের ইটাপাড়ী সেতু এলাকায় ইজিবাইক চালক আব্দুল হালিম (৫৫) হত্যা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রটির সন্ধান পায় সিআইডি।

সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে সিআইডির খুলনা ও রংপুর বিভাগের ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

ইজিবাইক চালক আব্দুল হালিম হত্যার ঘটনায় নীলফামারী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডির এলআইসি শাখা। এলআইসি শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রটিকে শনাক্ত করেন। এরপর ৭ মার্চ সিআইডির এলআইসি শাখার একটি টিম নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার তিনজন হলো মাসুম আলী (২৩), সাদেক আলী ও সমবারু (২৫)। এছাড়া সামিউল নামে চক্রের মূলহোতা এখনও পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদের মধ্যে সমবারু ইজিবাইকের মালিক সেজে চোরাই ইজিবাইকটি ৭৬ হাজার টাকায় জয়দেব রায় নামে এক ব্যক্তির কাছে দলিল করে বিক্রি করে দেয় ।

শেখ নাজমুল আলম বলন, গত ৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে শামীম ইসলাম ও সাদের আলীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নীলফামারীর একটি নর্দমা থেকে চুরি করা ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, চক্রটি ঢাকার আশেপাশে বসবাস করে। তারা ঢাকায় বসে চুরির পরিকল্পনা করে। এরপর বিভিন্ন জেলায় বের হয়ে যায়। তাদের বাড়ি গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর।

তিনি বলেন, চক্রটিকে গ্রেফতার না করতে পারলে ইজিবাইক চুরি বন্ধ হবে না। চক্রটি যাত্রীবেশে ইজিবাইকে ওঠেন। ইজিবাইকটি সমবারু নামে এক ব্যক্তি কিনেছিলেন। চক্রের সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ইজিবাইক চালক হালিমকে হত্যার কারণ হিসেবে ছিনতাইকারীরা সিআইডিকে জানিয়েছে, ইজিবাইকটি হালিমের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন তাই চোরকে এটি দিতে চায়নি। তাই হাত পা বেঁধে হত্যা করে ইজিবাইকটি নিয়ে যায় তারা।

শেখ নাজমুল আলম বলেন, চক্রটি ঢাকায় পরিকল্পনা করে নীলফামারী যায় ইজিবাইক চুরি করতে। সেটি ৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে। বিক্রির যে চুক্তিনামা আমরা সেটিও উদ্ধার করেছি। গ্রুপটি ঢাকাসহ সব জেলাতে চুরি করে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.