ফিরেই হ্যাট্রিক, খেলেন ৬ ছক্কা

অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দেয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন আকিলা ধনাঞ্জয়া। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই কিনা অম্ল-মধুর স্বাদ পেলেন এই স্পিনার। এক ওভারে হ্যাট্রিক করার পরের ওভারেই খেলেন পরপর ৬ ছক্কা। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক ওভারে ৬ ছয় হাঁকানো তৃতীয় ব্যাটসম্যান হলেন কাইরন পোলার্ড।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। স্বাগতিক পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ হয়ে দাড়ায় লো স্কোরিং। প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারে মাত্র ১৩১ রান। এই রান তুলতে তারা হারিয়ে ফেলে ৯ উইকেট।

সফরকারীদের ব্যাটিং ইনিংসে সর্বপ্রথম হানা দেন অভিষিক্ত কেভিন সিনক্লের। দলীয় ২০ রানের মাথায় ৪ রান করা দানুশকা গুনাতিলাকাকে পোলার্ডের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলা অভিষিক্ত পাথাম নিশাঙ্কাকে নিয়ে গড়েন ৫১ রানের জুটি। ২৯ বলে ৩৩ রান করা ডিকওয়েলাকে ফেরান জেসন হোল্ডার।

নিশাঙ্কাকে ফেরেন ফাবিয়ান এ্যালেনের স্পিনে। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ রান। মাত্র ৫ রান করা দলীয় অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলু ম্যাথুসকে ফেরান ৯ বছর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা ফিদেল এডওয়ার্ডস। এরপর হাসারাঙ্গা ডি সিলভার ১২, দিনেশ চান্দিমালের ১১ আর আসিন বান্দ্রার ১০ ছাড়া কোন ব্যাটসম্যানই বলার মতো রান করতে পারেননি।

ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাড়ায় ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩১ রান। এই ম্যাচে মোট ৬ জন বোলারকে ব্যবহার করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওমেড ম্যাককয়ের ২টি ছাড়া বাকি ৫ বোলারই পেয়েছেন ১টি করে উইকেট। আর শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যান হয়েছেন রান আউটের শিকার। ফলে ২০ ওভারে ক্যারিবীয়দের লক্ষ্য দাড়ায় ১৩২ রান।

ছোট লক্ষ্য তাঁড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক খেলতে থাকেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লেন্ডল সিমন্স এবং এভিন লুইস। মাত্র ৩.১ ওভারেই এই দুই ব্যাটসম্যান তুলে ফেলেন ৫২ রান। এরপরই শুরু হয় ধনাঞ্জয়া ম্যাজিক। নিজের দ্বিতীয় বলেই তুলে নেন লুইসের উইকেট। তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে ফেরান ক্রিস গেইল এবং নিকোলাস পুরানকে। ফলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৪তম বোলার হিসেবে তিন বলে পর পর তিনটি উইকেট পাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন ধনাঞ্জয়া। বিনা উইকেটে ৫২ থেকে উইন্ডিজদের সংগ্রহ দাড়ায় ৩ উইকেটে ৫২ রান। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ২৬ রান করা সিমন্সকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন হাসারাঙ্গা।

এবার দৃশ্যপটে পোলার্ড, ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভার এবং ধনাঞ্জয়ার তৃতীয় ওভারে ব্যাট হাতে যেন রুদ্র মূর্তি ধারণ করেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। এক ওভারে হাঁকান পর পর ৬ টি ছক্কা। আগের ওভারে হ্যাট্রিক করে মধুর স্বাদ পাওয়া ধনাঞ্জয়া দেখা পান তিক্ততারও। পোলার্ড টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এমন কৃর্তি গড়েছেন।

এর আগেরটি ছিল ভারতের যুবরাজ সিংয়ের। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬ টি ছক্কার হাকানো তৃতীয় ব্যাটসম্যান পোলার্ড। যুবরাজ এবং তিনি বাদে এমন রেকর্ড অর্জন করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হার্সেল গিবস। এক ওভারে পোলার্ড ৩৬ রান নেয়ার সঙ্গে আরও একটি রেকর্ড গড়েন। এর আগে পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ৯৮ রান তুলতে পারেনি কোন দল।

এরপর পোলার্ড আর বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি। ১১ বলে ৩৮ রান করে হাসারাঙ্গার বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়ে আউট হয়ে যান। এর পরের বলেই এ্যালেনকে ফেরান এই হাসারাঙ্গাই। পরপর দুই উইকেট নেয়ায় আবারও জাগে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা। তবে ডোয়াইন ব্রাভো এবং হোল্ডার আর কোন বিপর্যয় ঘটতে দেননি। ৪১ বল হাতে রেখে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ৪ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে ৩ টি করে উইকেট শিকার করেন ধনাঞ্জয়া এবং সিলভা।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.