মাদক মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নং ওয়ার্ডের বরখাস্তকৃত কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে অস্ত্র মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

আজ (১ মার্চ) দুপুরে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদেনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর-১ বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম ইমরুল কায়েস এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ইরফানকে অব্যাহতির সুপারিশ করে মাদক ও অস্ত্র মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পরিদর্শক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে ওই মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দেন আদালত।

গত বছরের ২৪ অক্টোবর রাতে ধানমণ্ডি এলাকায় সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো হাজী সেলিমের একটি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ। পরদিন ২৫ অক্টোবর পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটের দেবীদাস লেইনে হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায় র‌্যাব। আটক করা হয় ইরফান ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে। ওই ভবন থেকে দুটি অবৈধ পিস্তল, গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করার কথা সে সময় র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

মদ আর ওয়াকিটকির জন্য ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। দেবীদাস লেইনে ওই অভিযানের মধ্যেই চকবাজারের আশিক টাওয়ারে ইরফানের ‘নির্যাতন কেন্দ্রের’ সন্ধান পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। পরে ইরফান সেলিমকে কারাগারে পাঠানো হয়। অস্ত্র ও মাদক আইনে আলাদা মামলা দায়ের করা হয়। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ থেকেও বরখাস্ত হন তিনি।

র‌্যাবের ওই অভিযানের পর রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় হাজী সেলিমের ‘দখলদারিত্বের’ খবর আসতে থাকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয় তারাও হাজী সেলিমের ‘অবৈধ সম্পদ’ অনুসন্ধানে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে।

ইরফান ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে দায়ের করা র‌্যাবের মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুরান ঢাকায় ইরফানদের বাড়িতে সেই অভিযান চালানো হয়। ভবনের চতুর্থ তলা থেকে জাহিদুল মোল্লাকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৪০৬টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আর চতুর্থ তলার অপর একটি কক্ষ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল এবং ইরফান সেলিমের কক্ষ থেকে ১২টি বিয়ারের ক্যান উদ্ধার করা হয়।

অন্যদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, আগ্নেয়াস্ত্র বা মদ ও মাদক যে ইরফান সেলিমের, সে বিষয়ে সন্দেহাতীত কোনো প্রমাণ তারা পায়নি। তবে জাহিদ মোল্লার কোমর থেকেই একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছিল, সঙ্গে ৪০৬টি ইয়াবা পাওয়া গিয়েছিল, সে কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র ও মাদকের মামলায় ইরফান সেলিমের অব্যাহতির সুপারিশ করা হলেও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারপিটের মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.