মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে গুলি, নিহত বেড়ে ১১

মিয়ানমারে জান্তা শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিন দিন জোরালো হচ্ছে। সঙ্গে দমন–পীড়নও জোরদার করছে নিরাপত্তা বাহিনী। কারাবন্দী অং সান সু চির মুক্তি এবং সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে আজ রোববার দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে অংশ নিতে রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো লোক। নিরাপত্তা বাহিনীও বিক্ষোভকারীদের দমনে এদিন বেশি সহিংস হয়ে ওঠে। তাদের ছোড়া গুলিতে সবশেষ খবর পর্যন্ত অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।

আজ রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম, চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দেশটির রাজনীতিবিদ কিয়া মিন হিটেক জানিয়েছেন, দাউই শহরের বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে পুলিশ। এতে একজনের মৃত্যু হয়। এরপর আরও দুইজনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও জানিয়েছে, দাউই শহরে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জনের বেশি।

দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনেও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এতে এক আন্দোলনকারীর বুকে গুলি লাগে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিচয় এখনও জানা যায়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।

ইয়াঙ্গুনের মূল শহরে স্টান গ্রেনেড দিয়ে শিক্ষকদের একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এসময় এক নারী মারা গেছেন। যদিও তার মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্ট করে এখনও জানা যায়নি। ওই নারীর মেয়ে এবং এক সহকর্মী এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া পরে আরও চারজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে ব্যর্থ হওয়ার পর পুলিশ ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন এলাকায় গুলি চালাতে শুরু করে। এসময় ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।

সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। প্রায় শুরু থেকেই জনসাধারণের বিক্ষোভ চলছে। শনিবার দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর অবস্থান নেয় বিক্ষোভের বিরুদ্ধে। এক নারী গুলিবিদ্ধ হন এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রোববারও বিক্ষোভ প্রতিহত করতে অসহিংস পদক্ষেপ শুরু করে তারা।

রয়টার্স বলছে, তবে দেশজুড়ে বিক্ষোভে গুলি চালানো ও হতাহতদের ব্যাপারে পুলিশ বা ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের মুখপাত্রের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জানতে চেয়ে ফোন করা হলে কোনো সাড়া দেয়নি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষস্থানীয় সরকারি নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনীর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর থেকে বিক্ষোভের মুখে মিয়ানমার। সু চির মুক্তি ও প্রায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে দেশটিতে।

সেনাশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে এই বিক্ষোভের পাশাপাশি মিয়ানমারে অসহযোগের ডাক দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। অসহযোগের প্রতি সমর্থন দিন দিন জোরালো হচ্ছে। প্রথমে অসহযোগ শুরু করেন চিকিৎসকেরা। পরে শিক্ষকসহ অন্য পেশাজীবী ও সরকারি কর্মচারীরা এতে যোগ দিচ্ছেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.