জাতিসংঘে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত

জাতিসংঘে মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি তার নিজের দেশের সামরিক সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন। মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে যে কোনও পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূ কিয়াও মোয়ে তুন দেশটির জনগণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদানে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের এক বিশেষ বৈঠকে সব সদস্য রাষ্ট্রকে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতিতে দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

কাতারিভত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে এক বিরাট বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের মহাসচিবের বিশেষ দূতের এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের সময় সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা করে এ সব কথা বলেন।

মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি কিয়াউ মোয়ে তুন তার বক্তৃতাকালে তিনটি আঙুল একত্রিত করে পরিদর্শন করেন। সরকারকে সামরিক ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মিয়ানমারে প্রতিবাদকারীদের মধ্যে তিনটি আঙুল একত্রে পরিদর্শন ট্রেডমার্ক প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সভায় রাষ্ট্রদূত কিয়াউ মোয়ে তুন বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) -এর দুর্দান্ত জয়ের মধ্য দিয়ে বোঝা যায় যে মিয়ানমারের জনগণ স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি’র সঙ্গে রয়েছেন। মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের মতের সাথে তিনি একমত হয়েছেন যে আধুনিক বিশ্বে সামরিক অভ্যুত্থান গ্রহণযোগ্য নয়। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের জনগণের লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত অবিলম্বে সামরিক অভ্যুত্থান বন্ধ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘকে সামরিক অভ্যুত্থান বন্ধে ‘প্রয়োজনীয় যে কোনও উপায়’ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে বলেন, কারণ শুক্রবার রাবার বুলেট ও স্টান গ্রেনেড দিয়ে পুলিশ জান্তা বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে আটক করা হয় অং সান সু চিসহ তার দল এনএলডির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের।

এ অবস্থায় রাজপথে বিক্ষোভে পাশাপাশি মিয়ানমারে নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার সরকারি চাকরিজীবী ও পেশাজীবী জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এই অসহযোগ আন্দোলনে শামিল হচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন সেখানে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.