চিনি শিল্পে ৫ বছরে লোকসান তিন হাজার ৩৯ কোটি টাকা

রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) বিগত ৫ বছরে প্রায় তিন হাজার ৩৯ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। লোকসানের ৮টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। কারণগুলো সমাধান করে বন্ধ চিনিকলগুলো চালুকরণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু’র সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এ কে এম ফজলুল হক, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ও মো. শফিউল ইসলাম এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বর্তমানে দায় দেনার পরিমাণ আট হাজার ৮৪৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। দায় দেনার মধ্যে ব্যাংক ঋণ সাত হাজার ১৯৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ডিএসএল ও পাকিস্তানী ঋণ ৯৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, আখের দাম ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা, বেতন বাকি ৯২ কোটি ৩ লাখ টাকা, প্রভিডেন্ট ফান্ড খাতে ১০৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, গ্র্যাইচুইটি ২৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা, সরবরাহকারীদের পাওনা ১৩৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, আয়কর বাবদ ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ভ্যাট ৯ কোটি টাকা, ডিলার জামানত ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিগত ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে তিন হাজার ১৪৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর সাত হাজার ৮৬ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে তিন হাজার ৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এই লোকসানের কারণগুলো হলো- চিনির উৎপাদন খরচের চেয়ে বিক্রয় মুল্য কম, বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কমে যাওয়া, পুঞ্জিভুত ঋণ ও সুদের পরিমাণ অনেক বেশি, অধিক চিনি সমৃদ্ধ, পোকা ও রোগবালাই প্রতিরোধ সক্ষম আখের জাত উদ্ভাবন না হওয়া, কারখানাগুলো দীর্ঘদিনের পুরনো ও জরাজীর্ণ, বেসরকারি খাতে আমদানীকৃত ‘র’ সুগার থেকে রিফাইন্ড সুগার উৎপাদন করে কম মূল্যে বাজারজাত করা, আখের মুল্য ও চিনির মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকার কারণে ক্রমাগত লোকসানের কারণে ব্যাংক ঋণ নিয়ে পরিচালনা করার কারণের ঋণের সুদ বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং চিনি সংগ্রহের হার কমে যাওয়া।

বৈঠকে জানানো হয়, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বর্তমানে মোট পদ সংখ্যা হচ্ছে ১৭ হাজার ২৬৩টি। এর মধ্যে ছয় হাজার ৩১টি পদ শূন্য রয়েছে। কমিটি শূন্যপদ পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল প্রতিষ্ঠানের অপ্রয়োজনীয় জনবল ছাঁটাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.