নিউজিল্যান্ডের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। মার্টিন গাপটিলের বিদ্ধংসী ব্যাটিংয়ের সুবাদে প্রথমে ব্যাট করে ২১৯ রানের বিশাল পুঁজি পায় কিউরা। বোলিংয়ে মিচেল স্যান্টনারের ৪ উইকেট নিলে, মার্কাস স্টইনিসের ঝড়ো ব্যাটিংও প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচে জিততে দেয়নি অজিদের।

২০২০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২১৫ রানেই থেমেছে সফরকারীদের ব্যাটিং। ফলে ৪ রানের জয় নিয়ে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। মার্টিন গাপটিল ৫০ বলে করেন ৯৭ রান। অন্যদিকে মার্কাস স্টইনিসের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ৭৮ রানের একটি ইনিংস।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় নিউজিল্যান্ড। দলীয় ২০ রানের মাথায় টিম সেইফার্টের উইকেট হারায় তারা। মাত্র ৩ রান করে কেন রিচার্ডসনের বলে ফিঞ্চের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তারপরই শুরু হয় গাপটিল ঝড়। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭০ বলে দুজনে যোগ করেন ১৩১ রান। উইলিয়ামসন দেখে শুনে খেললেও গাপটিল খেলতে থাকেন হাত খুলে। ৬টি চার ও ৮টি ছয়ের সুবাদে মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি থেকে ৩ রান দূরে থেকে আউট হয়ে যান এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ২০১৯ সালের অক্টোবরের পর এই প্রথম ৫০ পেরনো ইনিংস খেললেন গাপটিল। আর টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন নভেম্বরে।

গাপটিল আউট হওয়ার পর হাফ সেঞ্চুরি করেন উইলিয়ামসন। এরপর আর মাত্র ৩ রান যোগ করে অ্যাডম জাম্পার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩৫ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ে সুবাদে কিউই অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৫৩ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস। এরপর জিমি নিশাম খেলতে নেমে তিনিও ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালান। মাত্র ১৬ বলে করেন ৪৫ রান। এই ইনিংস খেলতে তিনি ছয় হাঁকিয়েছেন ৬টি আর চার হাঁকিয়েছেন মাত্র ১টি। এরপর আর কোন কিউই ব্যাটসম্যান বলার মতো রান করতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাড়ায় ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩ উইকেট নেন রিচার্ডসন।

বড় লক্ষ তাঁড়া করতে মাত্র দলীয় ৩৪ রানের মাথায় ম্যাথু ওয়েডের উইকেট হারায় সফরকারীরা। ১৫ বলে ২৪ রান করে টিম সাউদির বলে ফিরে যান তিনি। অধিনায়ক ফিঞ্চ ১২ রানের বেশি করতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দ্বিতীয় ম্যচেও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মাত্র ৩ রান করে স্যান্টনারের বলে আউট হয়ে যান তিনি।

এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নাম জস ফিলিপ ৩২ বলে ৪৫ রান করেন, তাকেও ফেরান স্যান্টনার। এই বাঁহাতি স্পিনার অ্যাস্টন এগার এবং মিচেল মার্শকেও পর পর দুই বলে আউট করে সাজঘরে ফেরান। ফলে ইনিংসের ১৩ ওভারের মধ্যে ১১৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। এরপরই শুরু হয় স্টইনিসের ব্যাটিং তাণ্ডব। বলতে গেলে ‘ওয়ান ম্যান আর্মির’ মতো দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌছে দেন। স্টইনিসের তান্ডবে চাপা পড়ে যায় ডেনিয়েল স্যামসের ক্যামিও ইনিংস। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১৫ বলে তিনি করেন ৪১ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১৫ রান, আর শেষ দুই বলে প্রয়োজন ৯ রান। শ্বাস রুদ্ধকর এই ম্যাচে জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।

মূলত ১৯.৫ ওভারের মাথায় স্টইনিস আউট হয়ে গেলে জয়ের স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে যায় তাদের। যদিও শেষ বলে ঝাই রিচার্ডসন একটি চার মেরে হারের ব্যবধান কমিয়ে আনেন। আউট হওয়ার আগে ৭ চার ও ৫ ছয়ের সুবাদে স্টইনিসের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ৭৮ রান। নিউজিল্যান্ডের হয়ে স্যান্টনারে শিকার ৪টি আর জিমি নিশাম নেন ২টি উইকেট।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.