পরমাণু অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিলে কেউ ঠেকাতে পারত না: খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনি বলেছেন, তেহরান পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে নিজের যৌক্তিক অবস্থান থেকে সরে আসবে না এবং প্রয়োজন হলে শতকরা ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে।

ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, দেশের প্রয়োজনে পরমাণু সক্ষমতা অর্জনের ক্ষেত্রে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং এ কারণে আমাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০-এ সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং যত মাত্রা প্রয়োজন হবে তত মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হবে। উদাহরণ স্বরূপ নিউক্লিয়ার প্রোপালশন [প্রযুক্তি] বা অন্য কোনো কাজে আমাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা শতকরা ৬০ ভাগ পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে।

খামেনি বলেন, পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রসহ যেসব অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে গণহারে হত্যা করা যায় সেসব অস্ত্র তৈরিতে ইসলামের বিধিনিষেধ রয়েছে এবং আমরা সে বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। এখানে মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদী চক্র বারবার বলে আসছে ‘আমরা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেব না।’ তাদের জেনে রাখা উচিত ইরান যদি পরমাণু অস্ত্র তৈরির করা সিদ্ধান্ত নিত তাহলে ইহুদিবাদীরা তো দূরের কথা তাদের চেয়ে বড় শক্তিগুলোর পক্ষেও তা প্রতিহত করা সম্ভব হতো না।

এ সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের দু’টি শহরে আমেরিকার পরমাণু বোমা হামলায় দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ হত্যার কথা স্মরণ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, নিরপরাধ মানুষের ওপর গণহত্যা চালানো পশ্চিমাদের পাশবিক মানসিকতা থেকে উৎসারিত। কিন্তু ইরান এই মানসিকতায় বিশ্বাস করে না।

তিনি আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে পরমাণু অস্ত্র নিছক একটি অজুহাত। আমাদের কাছে সাধারণ মানের কোনো সমরাস্ত্র থাকুক তাও তারা চায় না। কারণ, তারা ইরানকে আত্মরক্ষার অধিকার দিতেই রাজি নয়।

ইরান এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে এবং ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় এই মাত্রা সাড়ে তিন ভাগ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি ইরান আবার ২০ মাত্রায় সমৃদ্ধকরণ শুরু করেছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে শতকরা ৯০ ভাগ বা তার বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রয়োজন হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.