নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে আলোচনায় বসবে না ইরান

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, ২০১৫ সালে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার পুনরুজ্জীবন নিয়ে ইরান তখনই আলোচনায় বসবে যখন এতে স্বাক্ষরকারী সবগুলো দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।

ইরানের প্রেস টিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরান নীতির সমালোচনা করছেন ঠিকই কিন্তু বাস্তবে তিনি ট্রাম্পের পথই অনুসরণ করছেন।

২০১৮ সালের মে মাসে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বের করে ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ শুরু করেন ট্রাম্প। কিন্তু ইরান এর বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ প্রতিরোধ’ গড়ে তোলে এবং বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি ‘সর্বোচ্চ ব্যর্থ’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। বাইডেন ওই সমঝোতায় ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও তিনি ইরানকে আগে পরমাণু সমঝোতার সব ধারা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। তেহরান জানিয়েছে, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার আগে ইরান তার প্রতিশ্রুতিতে ফিরে যাবে না।

জাওয়াদ জারিফ বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমেরিকা পরমাণু সমঝোতায় ফিরতে পারবে না। আমেরিকা শুধু বলপ্রয়োগ, নিষেধাজ্ঞা আর চাপ প্রয়োগের ভাষা বোঝে কিন্তু হাজার বছরের ইতিহাস বিবেচনায় নিয়ে দেশটি কাজ করে না। আমাদেরও একটি বিশ্বময় সাম্রাজ্য ছিল যা আমেরিকার ইতিহাসের চেয়ে বেশিদিন টিকেছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করে ইতিহাসের কোনো যুগে কেউ কিছু আদায় করতে পারেনি। আর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ যে ‘সর্বোচ্চ ব্যর্থ’ হয়েছে তা তো তারা নিজেরাই স্বীকার করছে। ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা ত্যাগ করেছিলেন ইরান সরকারের পতন ঘটানোর আশায়। অথচ এখন তার সরকারের পতন হয়েছে আর আমরা এখনো টিকে আছি। আমার মনে হয় এটি একটি ভালো শিক্ষা। [গত ৪০ বছরে] আমেরিকার সাতজন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা হারিয়েছেন। তাদের প্রত্যেকে ইরান সরকারের পতন চেয়েছেন। আজ তাদের কেউ ক্ষমতায় নেই কিন্তু আমরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছি।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.