ম্যাচ ফিক্সিং: আইসিসির নজরদারিতে ৩ বাংলাদেশি

বিনোদনের ক্রিকেটে দশ ওভারের টি-টেন লিগ নতুন সংযোজন। গত চার বছর ধরে এই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে আসছে আবুধাবি। এখানে যেমন ক্রিকেটীয় বিনোদন থাকে তেমনি থাকে জুয়াড়িদের কালো থাবা। এই টুর্নামেন্টের প্রত্যেকটি আসরেই ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এবার টি-টেন খেলা তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিং অভিযোগের তদন্ত করছে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ (আকসু)।

আবুধাবি টি-টেন লিগ খেলতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের পাঁচ জন ক্রিকেটার। তাদের মধ্যে পুনে ডেভিলসে খেলা মনির হোসেনের সঙ্গে টুর্নামেন্ট চলাকালেই নাকি কথা বলেছেন আকসুর কর্মকর্তারা। মারাঠা অ্যারাবিয়ান্সের হয়ে খেলা সোহাগ গাজী ও মুক্তার আলীর ওপরও আকসু নজর রেখেছে তারা।
দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে দুবাই থেকে এমনটাই জানিয়েছেন টি-টেন লিগের এক কর্মকর্তা।

ড্রাফটে নাম থাকলেও মনিরকে দলে ভেড়ায় পুনে। সেই পুনেরই অধিনায়ক ছিলেন নাসির হোসেন। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে খেলার সুযোগ না পেলেও শেষের একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন মনির। ঐ ম্যাচে মাত্র ১ ওভার বল করে তিনি দিয়েছিলেন ৩৫ রান! ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা সন্দেহে টিম হোটেলেই তার মোবাইল পরীক্ষা করেছেন আকসুর কর্মকর্তারা। এ প্রসঙ্গে মনির বলেন, ‘শেষ ম্যাচে ফিল্ডিং করতে গিয়ে হাতে ব্যথা পেয়েছিলাম। ব্যথা নিয়েই কেন বোলিং করেছি, সেটা জানতে চেয়েছিলেন আকসুর কর্মকর্তারা। আমাকে জানানো হয়েছে, যোগাযোগ করা হলে যেন সহযোগিতা করি।’

টি-টেনে খেলা জাতীয় দলের সাবেক এক ক্রিকেটার জানান, ‘মনিরের একটি ডেলিভারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া তার মোবাইলও পরীক্ষা করা হয়েছিল, জানতে চাওয়া হয়েছে তার এজেন্টের নামও।’

এ প্রসঙ্গে সোহাগ বলেন, ‘ঢাকা থেকে যাওয়ার আগেই বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তারা আমাদের ব্যাখা করেছিলেন। ওখানে যাওয়ার পর থেকেই জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকতে হয়েছে। হোটেলেই থাকতেন আকসুর কর্মকর্তারাও। বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সুযোগ ছিল না। আকসুর কর্মকর্তারাও কিছু জানতে চাননি। আর খেলা শেষ করে আমরা তিনজন (গাজী, মুক্তার ও মোসাদ্দেক) দুবাইয়ে চলে এসেছিলাম। আকসু প্রয়োজন মনে করলে ডাকতে পারে। কখনও ডাকলে কথা বলতে সমস্যা নেই।’

এবারের টি-টেন লিগ শুরুর আগেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমিরাতের ক্রিকেটার সানডে সিংকে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি। তবে লিগ শেষে ফিক্সিংয়ের পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন থাকলেও ২০২২ সালে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বিশ্ব ক্রিকেটের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এমনটাই জানিয়েছেন টি-টেন সংশ্নিষ্ট বাংলাদেশের একজন সংগঠক। তবে বাংলাদেশের এই তিন ক্রিকেটার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারলে হয়ত তাদের সতর্ক করেই ছেড়ে দেয়া হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে টি-টেন সংশ্নিষ্ট বাংলাদেশের সংগঠক বলেন, ‘বিষয়টি আইসিসি তদন্ত করছে। টি-টেনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতাও পাচ্ছেন সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা। শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না। খারাপ লেগেছে বাংলাদেশের দু’জন ক্রিকেটার সোহাগ গাজী ও মুক্তার আলীকে সন্দেহের তালিকায় রাখায়। ওরা তো জাতীয় দলে খেলেছে। প্রার্থনা করি, তারা যেন নির্দোষ প্রমাণিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইসিসি ও আকসু এক বছর ধরে তদন্ত করে। কেবল সন্দেহের বশে কাউকে তালিকাভুক্ত করে না তারা। কেউ অনিচ্ছাকৃত ভুল করলেও তদন্ত শেষে সতর্ক করে দেয়। আমরা যতটা জেনেছি, আইসিসি ২০২২ সালে একাধিক ক্রিকেটারকে নিষেধাজ্ঞা দেবে।’

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.