‘বিশেষ ছাড়ে’ খেলাপি ঋণ কমেছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর (২০২০) জুড়ে ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছিল ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করেও খেলাপি হননি গ্রাহকরা। তাই এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে পাঁচ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের (২০২০ সালের) ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণের সাত দশমিক ৬৬ শতাংশ খেলাপি, যা অর্থের পরিমাপে ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০১৯ সাল শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ কমেছে ৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

ঋণ খেলাপির মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর রয়েছে ৪২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ৪০ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা আর বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। এছাড়াও বিদেশি ব্যাংকের ৪ হাজার ৬১ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা, যা ওই সময়ে মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর জুন শেষে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, যা ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চ থেকে দেশে শুরু হয় মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। এর প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও নানা খাতে সংকট তৈরি হয়। এই সংকটকালে ঋণগ্রহীতাদের সুবিধা দেয় সরকার। এই সুবিধার ফলে ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়নি তারা।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৬ মে ঋণখেলাপিদের মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয় সরকার। সরকারের দেওয়া ‘বিশেষ’ ওই সুবিধার আওতায় গত বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলো নবায়ন করে, যার অর্ধেকই করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো।

অর্থসূচক/এনএইচ/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.