দেশের পুঁজিবাজারে হঠাৎ করেই যেন পতন ধারা শুরু হয়েছে। গত সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাঁচদিনই সূচক কমেছে বাজারে। তবে আগের চার দিনের দরপতনকে স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন ভাবা হলেও আজকের বড় দরপতনকে সন্দেহজনক বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এ কারণে আগামীকাল সোমবার থেকে বাজারে নজরদারি আরও জোরদার করবে তারা।
বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আজ (৭ ফেব্রুয়ারি) সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে তীব্র দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪২ পয়েন্ট কমেছে।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ওই ১৪২ পয়েন্টের মধ্যে ৮০ পয়েন্ট কমেছে মাত্র ছয়টি কোম্পানির শেয়ারের দর পতনে। বড় বাজারমূলধনধারী এই কোম্পানিগুলো সূচকের উপর বড় ভূমিকা রাখে। মার্কেট মুভার হিসেবে পরিচিত এই কোম্পানিগুলো হচ্ছে-বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি), বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ সিমেন্ট, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড।
আজ আলোচিত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দরপতন হয়েছে। দিনের শুরু থেকেই এসব শেয়ারে যথেষ্ট বিক্রির চাপ ছিল। এর মধ্যে ১১টি ব্রোকারহাউজ থেকে এসব শেয়ারের চাপ ছিল অন্যদের চেয়ে বেশি।
গত কয়েক দিনের দর পতনকে বিএসইসি স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন হিসেবেই দেখেছে। কিন্তু আজকের পতনকে তারা কিছুটা সন্দেহের চোখে দেখছে। তাদের মতে, এই পতনের পেছনে কিছুটা কারসাজি থাকলেও থাকতে পারে। তাই তারা আজকের লেনদেন তথ্য-উপাত্ত খতিয়ে দেখবেন। পাশাপাশি আগামীকাল সোমবার থেকে বাজারে নজরদারি বাড়াবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, আজকের বড় দর পতনের প্রেক্ষিতে বিকেলে ডিএসইর সার্ভিলেন্স বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ বৈঠকেও কয়েকটি ব্রোকারহাউজ থেকে শেয়ার বিক্রির চাপের বিষয়টি উঠে আসে। তার আলোকে ১১টি ব্রোকারহাউজের লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসূচককে বলেন, আজকের দরপতন সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে, এই দরপতন স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন না-ও হয়ে থাকতে পারে। এর পেছনে অস্বাভাবিক কিছু থাকলেও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, বিএসইসি আজকের দর পতনের প্রেক্ষিতে কিছু ব্রোকারহাউজের লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখবে। যদি সেখানে কোনো কারসাজি বা আইন লংঘনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিএসইএক্স পাঁচ হাজার নয়শ পয়েন্টে উঠার পর থেকেই দর পতন শুরু হয়েছে। তাই ওই অবস্থান থেকে আজকে পর্যন্ত লেনদেনে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি-না তা গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হবে।
সোমবার থেকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করবে বলে বিএসইসির মুখপাত্র আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে আজকের দর পতনের প্রেক্ষিতে বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য আগামীকাল সোমবার বিকালে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) বৈঠকে বসছে বিএসইসি।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.