শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ বন্ধু রিমান্ডে

রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তার দুই বন্ধুর পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- মুর্তুজা রায়হান চৌধুরি (২১) ও নুহাত আলম তাফসীর (২১)।

আজ (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর আদালতের হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভুইয়া এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সহকারী পুলিশের এএসআই ফারুক হোসেন বলেন, রোববার তাদের দুইজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে মামলাটির এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে রোববার (৩১ জানুয়ারি) চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন নিহত তরুণীর বাবা। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।

এজহারে আরও বলা হয়, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল। ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুইদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার তরুণী মারা যান।

এর আগে রোববার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, তারা পাঁচ জন বন্ধু মিলে উত্তরায় বামবু রেস্টুরেন্টে গিয়ে মদ্যপান করেন। অতিরিক্ত মদ্যপান করার কারণে তাদের মধ্যে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আরাফাত (২৮), রায়হান (২১), মাদুল, ও ভিকটিম মেয়েসহ তাদের বন্ধু নুহাত আলম তাফসীরের (২১) বাসায় রাত কাটায়। সেখানে রাতে ভিকটিম মেয়েটার সঙ্গে রায়হানের শারীরিক সম্পর্ক হয়। তাদের মধ্যে পূর্ব থেকে সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে ভিকটিম মেয়ে বমি করতে শুরু করে। তখন তাকে ইবনে সিনায় ভর্তি করানো হয়। ইবনে সিনা রোগীকে ঘণ্টা খানেক রাখার পর ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। দুদিন চিকিৎসার পর রবিবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়েটা মারা যায়। অন্যদিকে অতিরিক্ত মদ্যপানে তাদের আরেক বন্ধু আরাফাত একই হাসপাতালে শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

অর্থসূচক/এএইচআর

 

 

 

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.