উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে

তৃতীয় ধাপে ৬২টি পৌরসভায় নির্বাচনে আজ শনিবার সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ–সংঘাত হয়েছিল দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনের আগেও। ১৬ জানুয়ারি ওই নির্বাচনের দিনও বিভিন্ন জায়গায় সংঘাত হয়েছে, সিরাজগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী। এরপর গত বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সহিংসতায় দুজন নিহত হন। এসব ঘটনা শঙ্কা বাড়িয়েছে।

শীত উপেক্ষা করে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গতকালই কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়। ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

এ ধাপে ৬৪ পৌরসভায় ভোটের তফসিল হলেও আইনগত জটিলতা থাকায় পাবনার সুজানগর পৌরসভার ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় শনিবার ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, ৬২টি পৌরসভায় ২২৯ জন মেয়র পদে, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৫৫ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৩৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মোট ৩ হাজার ৩৪৪ জন প্রার্থী তৃতীয় ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তাছাড়া ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপে ৩৭ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। কুমিল্লার লাকসাম, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া– এই পৌরসভায় মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। এছাড়া নয়জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবং ২৫ জন সাধারণ কাউন্সিলর পদেও প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন।

নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ইতোমধ্যে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। ভোটের দিন চার স্তরের নিরাপত্তা থাকছে।

আর ৬২টি পৌরসভায় ৬২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে মোট পাঁচ দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগের দুই দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পরের দুই দিন তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

নির্বাচনী এলাকাগুলোয় বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগামী রোববার (৩১ জানুয়ারি) ভোর ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ১২টা থেকে ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে লঞ্চ, ইঞ্জিলচালিত সবধরনের নৌ-যান ও স্পিডবোট বন্ধ থাকবে। তবে ইঞ্জিন চালিত ক্ষুদ্র নৌযান বা ভোটাররা চলাচলের জন্য ক্ষুদ্র নৌযান চলাচল করতে পারবে।

এখন পর্যন্ত পাঁচ ধাপে পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে কমিশন। প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। গত ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৬০টি পৌরসভায় ভোট হয়। আর তৃতীয় ধাপে ৬২টি পৌরসভায় আজ ৩০ জানুয়ারি ভোট হচ্ছে।

তৃতীয় ধাপে যেসব পৌরসভায় ভোট হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে- দিনাজপুরের হাকিমপুর, নীলফামারীর জলঢাকা, কুড়িগ্রামের উলিপুর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, বগুড়ার ধুনট, শিবগঞ্জ, গাবতলী, কাহালু ও নন্দীগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর এবং নওগাঁর ধামইরহাট ও নওগাঁ সদর।

রাজশাহীর মুন্ডুমালা ও কেশরহাট, নাটোরের সিংড়া, পাবনা সদর, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু ও কোটচাঁদপুর, যশোরের মনিরামপুর, নড়াইলের সদর ও কালিয়া, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ, খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, বরগুনা সদর ও পাথরঘাট, ভোলার বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান, বরিশালের গৌরনদী ও মেহেন্দিগঞ্জ এবং ঝালকাঠীর নলছিটি।

এছাড়াও রয়েছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী, টাঙ্গাইল সদর, মির্জাপুর, ভূঞাপুর, সখীপুর ও মধুপুর, জামালপুরের সরিষাবাড়ী, শেরপুরের নকলা ও নালিতাবাড়ী, ময়মনসিংহের গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনার দুর্গাপুর, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, মুন্সীগঞ্জ সদর, রাজবাড়ীর পাংশা, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং শরীয়তপুরের নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও জাজিরা, সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজার সদর, কুমিল্লার বরুড়া ও চৌদ্দগ্রাম, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফেনীর হাতিয়া, নোয়াখালীর চৌমুহনী ও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.