জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

র‌্যাগিংয়ের দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) তৃতীয় বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) বিভিন্ন বিভাগের ১১শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৯ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ (২৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বহিষ্কৃতরা হলেন- মার্কেটিং বিভাগের মো. শিহাব ও মোহাম্মদ মশিউর রহমান, চারুকলা বিভাগের মো. আকাশ হোসেন ও নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের মো. তামিম হোসেন ও মো. রিজওয়ান রাশেদ সোয়ান, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. ফয়জুল ইসলাম নিরব, বাংলা বিভাগের মো. শিমুল আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের সাকিল মাহমুদ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. সালাউদ্দিন ইউসুফ ও মো. রোজেন নুর এবং ইতিহাস বিভাগের সারোয়ার হোসেন সাকিল।

এ বিষয়ে প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধু হলে র‌্যাগিংয়ের জন্য কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছে। আরেকটা বড় কারণ হলো তারা কেউই বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী না তারা সেখানে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন তাই এ বহিষ্কারাদেশ। নিজের হলে না থেকে অন্য হলে থেকে আবার র‌্যাগিং করে এর জন্যই এ শাস্তি।

গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত দাপ্তরিক আদেশে বলা হয়, ‘২০১৯ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ৪৮তম ব্যাচের (প্রথম বর্ষ) শিক্ষার্থীদেরকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগে উঠে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে গত ৯ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের দিন থেকে এ বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে।’

এদের মধ্যে শিহাবকে দুই বছর ও বাকিদের এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। বহিষ্কারের নির্ধারিত সময়ে এই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল কিংবা ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না। এছাড়া বহিষ্কারাদেশ শেষ হলে বঙ্গবন্ধু হল ছেড়ে তাদের জন্য বরাদ্দ করা হলে উঠারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে বহিষ্কৃত এই শিক্ষার্থীরাসহ ৩০-৩৫ জন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেওয়ার জন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গণরুমে যায়। র‌্যাগ দেওয়ার এক পর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে প্রথম বর্ষের ফয়সাল আলমকে ডেকে নিয়ে পরিচয় দিতে বলে তারা। এ সময় ফয়সাল উচ্চস্বরে হলের নাম বলতে না পারায় তাকে নানানরকম শারীরিক কসরত করতে বলে বহিষ্কৃতরা। ফয়সাল এতে অস্বীকৃতি জানালে তার ডান গালে পর পর দুটি থাপ্পড় দেয় শিহাব। দ্বিতীয় থাপ্পড় দেওয়ার পরেই ফয়সাল খিচুনি দিয়ে পড়ে যায় এবং তার কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ফয়সাল বাকরুদ্ধ হয়ে যায় এবং তার বন্ধুরা এবং দ্বিতীয় বর্ষের তিনজন মিলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.