‘ভ্যাকসিন টেস্ট হিসেবে গরিবদের ব্যবহার করবেন না’

করোনা ভ্যাকসিন গবেষণা টেস্ট হিসেবে গরিবদের ব্যবহার না করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

‘করোনার ভ্যাকসিন ভিআইপিরা আগে পাবেন না’-  স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, করোনার টিকা আসছে, এটা ভিআইপিরা আগে পাবে না।’ ভিআইপিরা আগে গরিবদের ওপর প্রয়োগ করে দেখবেন বাঁচে না মরে। তিনি আরো বলেন, ‘ভারতে এই ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে মারা গেছে কয়েক জায়গায়। যদিও তারা বলেছেন এটা ভ্যাকসিনের কারণে নয়। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তো মারা গিয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ, সংশয় সব রয়েছে। যাদের কাছ থেকে আপনারা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন তারা তো আমাদের বিশ্বাসের জায়গা হালকা করেছেন। কারণ ওই দেশের পলিটিশিয়ানরা আওয়ামী লীগ ও তাদের সরকারকেই বন্ধু মনে করে। আর সেই সরকারের মন্ত্রী বলেন, ভিআইপিরা আগে পাবে না। ভিআইপি কে? ভিআইপি হলো মন্ত্রী, আমলা আর এমপিরা।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি এই হয়, তাহলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনি ভ্যাকসিন গবেষণা টেস্ট হিসেবে গরিবদের ব্যবহার করবেন না। আগে নিজেরা নিয়ে দেখেন। আপনাদের শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। তারপর গরিবদের দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদি দেখেন এটার যথাযথ উপকার হয় তারপর গ্রামে-গঞ্জে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’

সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগে করোনা টিকা নিয়েছেন। ওখানকার স্বাস্থ্য ডিপার্টমেন্টের প্রধান পাউসিও আগে নিয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তো আছেন একেবারে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ভাইরাস কেন, কোনো ফাঁক দিয়ে বেহুলার বাসর ঘরের মতো যেন সাপ ঢুকতে না পারে ঠিক সেভাবেই আছেন প্রধানমন্ত্রী, ঠিক সেভাবেই আছেন ওবায়দুল কাদের এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ভিআইপিরা আগে গরিবদের ওপর প্রয়োগ করে দেখবেন গরিবরা বাঁচে না মরে।’

রিজভী আরো বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের মতো নাকি ভ্যাকসিনের কেন্দ্র করা হবে। তাহলে তো এই সরকারের যে বৈশিষ্ট্য, ভোটকেন্দ্র মানেই তো হলো ভোটাররা যেতে পারবে না। সুষ্ঠু ভোট হয় না। আওয়ামী লীগের লোকেরা ব্যালট বক্স পূরণ করেন। ভ্যাকসিনের কেন্দ্র যদি ইউনিয়ন-গ্রামে করা হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের লোকেরা এই ভ্যাকসিন পাবে এবং তারা যাদের সুপারিশ করবে কেবল তারাই তো ভ্যাকসিন পাবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাবি অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, আব্দুল খালেক, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.