বছরের মাঝামাঝি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বছরের মাঝামাঝিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যেতে পারে।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে চীনের মধ্যস্ততায় আজ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীনের ত্রিদেশীয় বৈঠক হয়।

ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লুও ঝাওহুই ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব হাও দো সোয়ান।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বছরের প্রথম কোয়ার্টারে আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বছরের মাঝামাঝিতে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে তাদের জাতীয় সংসদে সভা থাকার কারণে এই সময় দিয়েছে তারা।

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ঠিক কী প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসন শুরু হবে তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে যেসব রোহিঙ্গা যাবে তাদের চীনের পক্ষ থেকে করোনার টিকা দেওয়া হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় এবার চীনের মধ্যস্ততায় ত্রিপক্ষীয় এই বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাখাইনে গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গাদের পাঠানোর জন্য বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেখানে সব এলাকার রোহিঙ্গাদের না পাঠিয়ে, ধীরে ধীরে গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গাদের পাঠানোর উদ্যোগ নিলে সেটা প্রকৃতপক্ষে সুফল বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বর্তমানে আমাদের এখানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর আগে আমরা রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চু্ক্তি করেছি। এ চুক্তির আওতায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরাতে আমাদের কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ঘরে নতুন করে আরো প্রায় ৯০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে। দিনদিন এ সংখ্যা বাড়তেই থাকবে বলে জানান সচিব।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা ছয় দফায় মোট আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছি। এর মধ্যে মাত্র ৪২ হাজারের ভেরিফিকেশন করেছে মিয়ানমার সরকার। আজকের বৈঠকে ভেরিফিকেশনের বিষয়টি আরো ত্বরান্বিত করার কথা বলেছি।

এর আগে ত্রিদেশীয় এ বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন গত বুধবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হবে বলে আশা করি।

সেদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত বছরের জানুয়ারিতে আমাদের মধ্যে যে বৈঠক হয়েছিল তাতে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছিল। তবে দুঃখজনক হলো মিয়ানমার খুব ধীরগতিতে এগোচ্ছে। দেশটির আন্তরিকতার খুব অভাব।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.