প্রথম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের মতো দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনেও মেয়র পদে আওয়ামী লীগের জয়-জয়কার অবস্থা। গত ১৬ জানুয়ারি মোট ৬১টি পৌরসভায় নির্বাচনের সূচি ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে এরমধ্যে ৪টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এসব পৌরসভায় মেয়র পদে ভোটের দরকার পড়েনি। এছাড়াও নীলফামারীতে মেয়র প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সেখানে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। ফলে মেয়র পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয় মোট ৫৬টি পৌরসভায়।
ভোট হওয়া ৫৬ পৌরসভার মধ্যে ৪১টিতে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ। ছয়টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, চারটিতে বিএনপির প্রার্থী, দুটিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন। একটি পৌরসভায় জাতীয় পার্টি ও একটিতে জাসদের প্রার্থী মেয়র পদে জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া ভোটগ্রহণের আগেই চারটি পৌরসভায় মেয়র পদে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগের যাঁরা জয়ী- আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন- দিনাজপুরের বিরামপুরে অধ্যাপক মো. আক্কাস আলী, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে মতিউর রহমান, নওগাঁর নজিপুরে মো. রেজাউল কবির চৌধুরী, রাজশাহীর কাকনহাটে আতাউর রহমান খান ও ভবানীগঞ্জে আবদুল মালেক মণ্ডল, নাটোরের নলডাঙ্গায় মো. মনিরুজ্জামান মনির, গোপালপুরে রোকসানা মোর্ত্তজা লিলি ও গুরুদাসপুরে মো. শাহনেওয়াজ আলী, সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, উল্লাপাড়ায় এস. এম. নজরুল ইসলাম ও রায়গঞ্জে মো. আব্দুল্লাহ আল পাঠান, পাবনার ঈশ্বরদীতে ইছাহক আলী মালিথা, ফরিদপুরে খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ ও সাঁথিয়ায় মাহবুবুল আলম বাচ্চু, মেহেরপুরের গাংনীতে আহম্মেদ আলী, কুষ্টিয়া সদরে আনোয়ার আলী, কুমারখালীতে মো. সামসুজ্জামান ও মিরপুরে মোহা. এনামুল হক, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কাজী আশরাফুল আজম, বাগেরহাটের মোংলায় শেখ আব্দুর রহমান, মাগুরায় মো. খুরশীদ হায়দার টুটুল, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বিল্লাল সরকার ও ফুলবাড়িয়ায় গোলাম কিবরিয়া, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে লতিফুর রহমান রতন ও কেন্দুয়ায় মো. আসাদুল হক ভূঞা, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সৈয়দ হাসান সারওয়ার মহসিন, ঢাকার সাভারে আবদুল গনি, নরসিংদীর মনোহরদীতে আমিনুর রশিদ সুজন, শরীয়তপুরে পারভেজ রহমান, সুনামগঞ্জে নাদের বখত ও ছাতকে মো. আবুল কালাম চৌধুরী, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিপার উদ্দিন আহমদ ও কমলগঞ্জে জুয়েল আহমদ, কুমিল্লার চান্দিনায় মো. শওকত হোসেন ভূইয়া, ফেনীর দাগনভূঞায় ওমর ফারুক খাঁন, নোয়াখালীর বসুরহাটে আবদুল কাদের মির্জা, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে মোক্তাদের মাওলা সেলিম, খাগড়াছড়িতে নির্মলেন্দু চৌধুরী, বান্দরবানের লামায় জহিরুল ইসলাম ও গাজীপুরের শ্রীপুরে মো. আনিছুর রহমান।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চারজন জয়ী- ভোট নেওয়ার আগেই সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, পাবনার ভাঙ্গুরায় মো. গোলাম হাসনাইন, নারায়ণগঞ্জের তারাবতে হাছিনা গাজী ও পিরোজপুর সদরে মো. হাবিবুর রহমান মালেক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন।
আওয়ামী লীগের ছয় বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী- দিনাজপুরের বীরগঞ্জে পৌরসভায় মো. মোশাররফ হোসেন, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মোহাম্মদ হোসেন ফাকু, গাইবান্ধায় মতলুবর রহমান, রাজশাহীর আড়ানীতে মুক্তার আলী, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মো. সাজ্জাদুল হক রেজা ও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
বিএনপির চার প্রার্থী জয়ী- দিনাজপুর পৌরসভায় সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, বগুড়ার সান্তাহারে তোফাজ্জল হোসেন, হবিগঞ্জের মাধবপুরে হাবিবুর রহমান মানিক ও নবীগঞ্জে ছাবির আহমদ চৌধুরী জয়ী হয়েছেন।
বিএনপির বিদ্রোহী জয়ী- বগুড়ার শেরপুরে মো. জানে আলম খোকা ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে মো. আক্তার হোসেন বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতীয় পার্টির একজন জয়ী- গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জাতীয় পার্টির মো. আব্দুর রশীদ রেজা সরকার বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
জাসদের একজন জয়ী- কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জাসদের আনোয়ারুল কবির টুটুল বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
দুটি পৌরসভায় ফল মেলেনি- কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. পারভেজ মিয়া এগিয়ে থাকলেও একটি ভোট কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত থাকায় চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত হয়নি। কারণ বেসরকারি ফলাফলে প্রাপ্ত ২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ঘোষিত ২৭টি কেন্দ্রের ফলাফলে মো. পারভেজ মিয়া ৪৮৪ ভোটে এগিয়ে থাকলেও স্থগিত হওয়া ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের পূর্ব তিনতলা ভবন কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৮৫২টি। তাই নির্বাচনে জয়-পরাজয় ওই কেন্দ্রের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে পুনরায় নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভারও একটি কেন্দ্রের ফল না পাওয়ায় মেয়র পদের ফলাফল পাওয়া যায়নি।
অর্থসূচক/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.