‘দেশে ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি’

দেশে ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও আজও পূর্ণাঙ্গভাবে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা।

তিনি বলেন, এক ভোট পেলেও তিনি সুষ্ঠু ভোট চান। নির্বাচন নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করবেন না। নইলে তার ঠ্যাং ভেঙে বসুরহাটের রুপালি চত্বরে ঝুলিয়ে রাখবো।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) নোয়াখালীর বসুরহাট বাজারের রুপালি চত্বরে নির্বাচনী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা বলেন, নোয়াখালী কে চালাচ্ছে, নোয়াখালীর নেতা কে? রাজপুত্র। আহারে আমরা কত এতিম, কত অসহায়, থুথু উপরে মারলে নিজের গায়ে পড়ে। অনেক কথা বলা যায় না রে ভাই।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি, এ দেশের মানুষের ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, অর্থাৎ ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু আজো এ দেশে পূর্ণাঙ্গভাবে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

কাদের মির্জা বলেন, আমাকে ঠেকানোর জন্য ফেনীর আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী ও নোয়াখালী সদর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী এক কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। প্রতিটি ভোটারকে টাকা দিয়ে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘টাকা দিছে, টাকা খাই হালান। তারপর যাকে ইচ্ছা তারে ভোট দেন।’

আওয়ামী লীগের এই মেয়র পদপ্রার্থী বলেন, বসুরহাট পৌর নির্বাচনের মধ্যে প্রমাণ করে দিতে চাই-এ দেশে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব। কিন্তু ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, জেলার একজন সংসদ সদস্যের ছেলের নেতৃত্বে ফেনী জেলা থেকে ভোট উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার (এসপি), জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও নির্বাচন কমিশনকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আরো অভিযোগ করেন, ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেনকে বসুরহাটে আসতে দেওয়া হয়নি। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ১৬ জানুয়ারি ভোটে কোনো অনিয়ম হলে এর দায়দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও ডিসি-এসপিকে নিতে হবে।

কাদের মির্জা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বসুরহাটবাসীর গ্যাস না পাওয়ার ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি এ বিষয়ে বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে এ উপজেলায় গ্যাস না দিলে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস দিতে দেওয়া হবে না এবং কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী কয়েকজন সংসদ সদস্যের উদ্দেশে বলেন, তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফকে উদ্দেশ করে বলেন, তার দায়িত্বশীলতার অনেক ঘাটতি রয়েছে। তার এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হয়। এতে কি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া হয়েছে?

এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা ফারুক খান ও মাহবুবউল আলম হানিফ এবং ফরিদপুরের এমপি নিক্সন চৌধুরীর কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, আমি সাহস করে সত্য কথা বলি। অন্যায়-অনিয়ম ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। ভোট জালিয়াতি, ভোটডাকাতি চরম অন্যায়। অনিয়মের প্রতিবাদ আর ভোটচুরি কি একই আদর্শ? এসবের কাছ থেকে এ দেশের মানুষ পরিত্রাণ চায়। এসবের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল প্রমুখ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.