সম্পদের দিকে নজর গেলে সফল হতে পারবে না: ছাত্রলীগ নেতাদের প্রধানমন্ত্রী

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদর্শ নিয়ে নিজেকে যে গড়ে তুলতে পারবে সেই সফল হবে, আর যদি অর্থ সম্পদের দিকে নজর চলে যায় কখনো সফল হতে পারবে না। ভোগ বিলাস করতে পারবে; এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে নিজেদের গড়ে তোল, দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হও। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে এই ঐতিহ্যের কথা মনে রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলবে। এটা আমি চাই।

আজ সোমবার (০৪ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সংযুক্ত হয়ে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগঠনটাই হচ্ছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। করোনা ভাইরাসে ছাত্রলীগ অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। আমি যখনই যে কথা বলেছি তারা সেটা করেছে। ছাত্রলীগ সব সময় অগ্রগামী দল। তারাই পথ দেখিয়ে এগিয়ে যায়। এজন্য ছাত্রলীগ বয়সেও আওয়ামী লীগ থেকে বড়, এটাও ঠিক। কি তাই না? বড় না একটু? এক বছরের বড়। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগ একটা অগ্রগামী দল হিসেবেই কাজ করে।

তিনি বলেন, করোনাকালে ছাত্রলীগ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছ। কোন কাজই অবহেলার নয়, কোন কাজ ছোট নয়। আমরা ভাত খাই, খাবার খাই সেই খাবারের ফসল ফলায় কৃষক। সেই কৃষককে তো অবহেলার চোখে দেখার নয়। তারা তো আমাদের বেঁচে থাকার রসদ জোগায়। তাদের সম্মান অনেক বড়। আজকে যেমন তোমরা ধান কেটেছ। ছাত্রলীগের ছেলেরা এটাই প্রমাণ করেছে কোন কাজকে তোমরা ছোট করে দেখ নাই। আবারও বলব যখনই গ্রামে যাবে কাউকে ছোট করে দেখবে না। কোন কাজকে ছোট করে দেখবে না। সব কাজেরই গুরুত্ব আছে, সব কাজেরই মূল্য আছে। এটাই মানতে হবে এটাই দেখতে হবে। এটাই সব সময় নিজের আদর্শ হিসেবে নিতে হবে।

‘বড় সে হতে পারে যে নিজেকে ছোট করে দেখতে পারে। আর উপর দিকে তাকিয়ে চলতে গেলে হোচট খেতে হয় সেই জন্য মাটির দিকে তাকিয়ে চলতে হয়। সেজন্য মাটির দিকে তাকিয়ে চলতে হয়। এটা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে বাবা মা শিক্ষা দিয়েছেন। দাদা-দাদি শিক্ষা দিয়েছেন।’

ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগের যে মূলমন্ত্র শিক্ষা শান্তি প্রগতী। শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শান্তি আমরা চাই। এটা মাথায় রেখে ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতা কর্মীকে আদর্শ নিয়ে চলতে হবে এটাই আমি চাই। প্রত্যেকে আদর্শ নিয়ে না চলতে পারলে কখনো বড় হতে পারবে না। ধন সম্পদক অনেকে বানাতে পারবে কিন্তু দেশকে কিছু দিতে পারবে না মানুষকে কিছু দিতে পারবে না। নিজে ভোগ করতে পারবে। আবার করোনাকালে সে ভোগও সীমিত হয়ে যায়। সেটাও পারে না সেটাও বাস্তবতা।

তিনি বলেন, আমি দেখি, ছাত্রলীগের যে নির্দেশ দিয়েছি বৃক্ষরোপণ করার তারা করেছে, করোনা আক্রান্তদের সহায়তা করেছে। মানুষের সেবার জন্য কাজ করেছ সেগুলো করে যাবে। সেভাবে নিজেদের গড়ে তুলবে। আদর্শবান নেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। আগামী দিনের তোমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেত পারব।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান যখন অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসলেন। তার আগে তিনি মদদ দিয়েছিলেন খন্দকার মোশতাককে। পরে মোশতাককে হটিয়ে নিজে রাষ্ট্রপতি হলেন। এরপর তার যে কাজ ছিল, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম, অত্যাচার করা। একদিকে তাদের প্রলোভন দিয়ে দলে টানার চেষ্টা আর সেটা না হলে তাদের গুম, খুন-হত্যা করা।

শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ অসহযোগ আন্দোলন করে। অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে আমরা বিজয় অর্জন করি। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তারা তো সক্রিয় ছিল। দেশীয় এবং বিদেশি এজেন্টরা সবসময় সক্রিয় ছিল। তিনি সাড়ে তিন বছর হাতে যে সময় পেয়েছিলেন এ সময়ে একটা স্বাধীন দেশকে গড়ে তোলার সব কাজের ভিত্তিটাই তিনি তৈরি করে দিয়ে যান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাসহ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.