ঋণখেলাপি থেকে নাম বাদ, নির্বাচনে বাধা নেই মান্নার

ঋণ খেলাপিদের তালিকা থেকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত। ফলে বগুড়া-২ আসন থেকে তার নির্বাচন করতে আর কোনও বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে মান্নার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

গত ২৪ ডিসেম্বর ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর ফলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। অন‍্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ চেয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না রিট করেছিলেন। আদালত রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন। এর ফলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

মান্নার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছিলেন, হাইকোর্টের রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করবো।

যার ধারাবাহিকতায় ঋণ খেলাপিদের তালিকা থেকে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি) নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট খারিজের পর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা। মান্না ও তার দুই অংশীদারের ঠিকানায় পাঠানো এই নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। শাখা প্রধান তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরিত নোটিশটি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।

জানা গেছে, আফাকু কোল্ড স্টোরেজের মালিকানায় মান্না ৫০ শতাংশ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজু ২৫ শতাংশ অংশীদার। গত ৩ ডিসেম্বর পাঠানো নোটিশে বগুড়ার শিবগঞ্জের কিচক বাজারে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির কাছে খেলাপি বিনিয়োগ বাবদ মোট ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ব্যাংকের নোটিশে বলা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ করেনি। ফলে বকেয়া বেড়ে বর্তমান পরিমাণে দাঁড়িয়েছে। লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও কোনোরকম অগ্রগতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

২০২৫ সালের ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ না করলে ব্যাংক আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.