মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে, কিন্তু অনেকেই এটিকে ভুয়া বা সাজানো নির্বাচন বলে মনে করছেন। কেননা বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাদের অনেক নেতা জেলে আছেন, আর চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ ভোটই দিতে পারবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিবিসি ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবিসি বলছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল সামরিক সরকার। সেই ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে ব্যাপক বিরোধিতা শুরু হয় এবং তা ধীরে ধীরে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এখন সেই সরকার ধাপে ধাপে এই নির্বাচন করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের সমর্থন নিয়ে সামরিক জান্তা নিজেদের ক্ষমতাকে বৈধ ও স্থায়ী করার চেষ্টা করছে, কারণ তারা এই দীর্ঘ সংকট থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজছে।
নতুন একটি কঠোর আইনের আওতায় ভোটে বাধা দেওয়া বা বিরোধিতা করার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আইনে মৃত্যুদণ্ডসহ কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে।
আজ রোববার সকাল থেকে মিয়ানমারে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এর আগেই দেশটির অন্তত দুটি অঞ্চলে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ভোরে মান্দালয় অঞ্চলের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে রকেট হামলায় ৩ জন আহত হন এবং পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরমধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী।
অপরদিকে, থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে মিয়াওয়াদি শহরে শনিবার রাতে একাধিক বিস্ফোরণে দশটিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা গণমাধ্যমকে জানান, ওই হামলায় এক শিশু মারা গেছে এবং আরও ৩ জনকে জরুরি অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
কিছু ভোটার বলেছেন, এবারের নির্বাচন আগের চেয়ে বেশি ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত’ মনে হচ্ছে।
মান্দালয় অঞ্চলের বাসিন্দা মা সু জার চি বলেন, ‘ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা অনেক বদলে গেছে। আগে ভোট দেওয়ার সময় ভয় পেতাম, এখন স্বস্তি লাগছে। আমি দেশের জন্য ভোট দিয়েছি।’
মিয়ানমারের সামরিক সরকার নির্বাচন নিয়ে সব ধরনের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, তারা দেশকে আবার ‘বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়’ ফিরিয়ে নিতে চায়।
রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোট দেওয়ার পর জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং গণমাধ্যমকে জানান, এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি সেনাবাহিনীর প্রধান, একজন সরকারি কর্মচারী। আমি ইচ্ছা করলেই প্রেসিডেন্ট হতে পারি না।”
এই নির্বাচন তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা ভোট দিতে অস্বীকার করছে, তারা ‘গণতন্ত্রের দিকে অগ্রযাত্রাকে’ প্রত্যাখ্যান করছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.