কয়েক সপ্তাহের নাটকীয়তা, প্রযুক্তিগত বিভ্রাট আর জালিয়াতির পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পর অবশেষে হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাসরি আসফুরাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমর্থন আসফুরার জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
হন্ডুরাসের ন্যাশনাল ইলেকটোরাল কাউন্সিল (সিএনই) জানিয়েছে, রক্ষণশীল ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী নাসরি আসফুরা ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টির সালভাদর নাসরাল্লা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট।
বিজয়ী ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় নাসরি আসফুরা বলেন, ‘হন্ডুরাস, আমি দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। আমি আপনাদের হতাশ করব না।’
তবে এ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন লিবারেল পার্টির প্রার্থী সালভাদর নাসরাল্লা। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অসংগতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা কোনো ফলাফল আমি মেনে নেব না।’ তবে একই সঙ্গে তিনি সমর্থকদের শান্ত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট লুইস রেডন্ডো এ ফলাফলকে ‘সম্পূর্ণ অবৈধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
গত ৩০ নভেম্বর হন্ডুরাসে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোট গণনার সময় দুবার কারিগরি বিপর্যয় ঘটায় ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ বিলম্ব হয়। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট হাতে গণনা করতে হয়েছে। এই বিলম্বকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহজুড়ে রাজধানী তেগুচিগালপাসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন ক্ষমতাসীন লিব্রে পার্টির হাজার হাজার সমর্থক।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সিওমারা কাস্ত্রো এ ঘটনাকে ‘নির্বাচনী অভ্যুত্থান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন।
নির্বাচনী প্রচার চলাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, নাসরি আসফুরা না জিতলে হন্ডুরাসে মার্কিন আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমনকি মাদক ও অস্ত্র মামলায় যুক্তরাষ্ট্রে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে সবাইকে চমকে দেন ট্রাম্প।
নাসরি আসফুরার জয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নবনির্বাচিত প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা এবং অবৈধ অভিবাসন বন্ধে কাজ করতে আগ্রহী।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নাসরি আসফুরার এই জয় হন্ডুরাসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিভাজন আরও স্পষ্ট করবে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তবে বিরোধী শিবিরের বিক্ষোভ দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.