ভেনেজুয়েলার উপকূলে জব্দ করা তেলবাহী ট্যাংকার ও সেগুলোর তেল যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাখবে বা বিক্রি করবে বলে এ কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন যখন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর ক্ষমতা ছাড়ার চাপ বাড়াচ্ছে, তখনই এ মন্তব্য করলেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, জব্দ করা তেল আমরা রাখব। হয়তো বিক্রি করব, হয়তো রেখে দেব। হয়তো কৌশলগত মজুতেও ব্যবহার করব। জাহাজগুলোও আমরা রাখছি।
যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে তেল থেকে আয়ের অর্থ মাদক-সংক্রান্ত অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ধরছে। তবে কারাকাস এসব জব্দকে ‘দস্যুতা’ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ভেনেজুয়েলার দুটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে। একই সময়ে মার্কিন কোস্ট গার্ড তৃতীয় একটি ট্যাংকারের পিছু নিয়েছে, যাকে কর্তৃপক্ষ ভেনেজুয়েলার তথাকথিত ‘ডার্ক ফ্লিট’-এর অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে এসব জাহাজ ব্যবহৃত হয়। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, এটা এগোচ্ছে, শেষ পর্যন্ত আমরা সেটিও ধরব।
আলাদাভাবে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় সন্দেহভাজন একটি পাচারকারী নৌযানে হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ডের ভাষ্য, এতে একজন নিহত হয়েছেন।
জাহাজ জব্দের লক্ষ্য মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা কি না, এ প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, এতে তা হতে পারে… তিনি কী করবেন, সেটা তার ব্যাপার। আমার মনে হয়, সেটাই তার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে আমরা দেখব কী হয়।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র স্থলভাগেও অভিযান শুরু করতে চায়। তারা যদি স্থলপথে আসে, তাহলে বড় সমস্যায় পড়বে। আমরা চাই না আমাদের মানুষ বিষাক্ত হোক।
এর জবাবে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মাদুরো বলেন, ট্রাম্প নিজের দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার দিকে মনোযোগ দিলে ভালো হতো।
জানুয়ারি মাসে আবার ক্ষমতায় ফেরার পর ট্রাম্প মাদুরোকে গ্রেফতারে সহায়তাকারীদের জন্য পুরস্কারের অঙ্ক দ্বিগুণ করেছেন। তিনি মাদুরোকে ‘বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মাদক পাচারকারী’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোর সরকারকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ বা সেখান থেকে বের হওয়া নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দিয়েছে।
তেল রফতানির ওপর নির্ভরশীল ভেনেজুয়েলা সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থায় এসব পদক্ষেপ বড় ধাক্কা দিয়েছে বলে কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘চলমান আগ্রাসন’ নিয়ে আলোচনার জন্য ভেনেজুয়েলার অনুরোধে মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসার কথা রয়েছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.