ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় নয়াদিল্লি, কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশ মিশন নিয়ে উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়।
কূটনৈতিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, প্রণয় ভার্মাকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশ মিশনগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে গত ১০ দিনে প্রণয় ভার্মাকে দ্বিতীয়বার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হলো।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন ঘটনায় এ নিয়ে অন্তত ছয়বার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশটির রাষ্ট্রদূতকে।
আজকের আগে ১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। পরে এই তলবের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে দেশটির সহযোগিতা কামনা করা হয়। তাঁরা যদি ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে সক্ষমও হন, তবে তাঁদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়। নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও প্রণয় ভার্মাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে উগ্র ভারতীয়দের দ্বারা হামলার ঘটনার পর সব ধরনের কনস্যুলার সেবা ও ভিসা দেয়া স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, হাইকমিশনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কনস্যুলার সেবা ও ভিসা দেয়া স্থগিত করা হয়েছে।
গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে পৌনে ৯টা নাগাদ তিনটি গাড়িতে করে উগ্রবাদী সংগঠন অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রসেনা’র ২০-২৫ জনের একটি দল হাইকমিশনের বাংলাদেশ ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন।
আধ ঘণ্টার কম সময় অবস্থান নিয়ে তারা বাংলা ও হিন্দি ভাষায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পাশাপাশি তারা ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে হুমকি দেয়।
পরদিন রবিবার বাংলাদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে হাইকমিশনে অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রসেনা’র এই কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।
তবে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সত্য নয় বলে দাবি করে দিল্লি। দেশটির ভাষ্য, নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটেনি। বরং তারা বাংলাদেশের ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দেয় এবং বাংলাদেশে সব সংখ্যালঘুর সুরক্ষার দাবি জানায়।
পরে অবশ্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে ভারতের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাকে হত্যার হুমকি দেয়া কথা শুনেছেন বলে জানান উপদেষ্টা।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.