ফিনটেক থেকে বৈশ্বিক বিনিয়োগ: শাহ কামালের পথচলায় নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত

দেশের ফিনটেক, ফাইন্যান্স এবং বিনিয়োগ খাতে গত কয়েক বছরে যে নতুন ধারা তৈরি হয়েছে, তার অন্যতম স্থপতি শাহ কামাল। চট্টগ্রামের কাটাছরা থেকে উঠে আসা এই তরুণ ফাইন্যান্স বিশেষজ্ঞ এখন কাজ করছেন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ কাঠামো, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিং, ফিনটেক সল্যুশন ও কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজি নিয়ে। তাঁর কাজ বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার টেবিলেও।

২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে ফাইন্যান্সে স্নাতক হওয়ার পর তিনি পা রাখেন বিনিয়োগ ব্যাংকিং ও স্ট্রাকচার্ড ফাইন্যান্স খাতে। আঠারো বছরের ক্যারিয়ারজুড়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন। ফান্ড মোবিলাইজেশন, ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্ট্রুমেন্ট, AI–নির্ভর ফিনটেক সল্যুশন এবং উদ্ভাবনী ফাইন্যান্সিং মডেল তৈরিতে তাঁর দক্ষতা তাঁকে এই প্রজন্মের অন্যতম উল্লেখযোগ্য পেশাজীবীতে পরিণত করেছে।

বিশ্বখ্যাত ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান Delphos USA–তে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সময় তিনি জড়িত ছিলেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্পের সঙ্গে। ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ পোর্টফোলিও পরিচালনাকারী এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশে ডিজিটাল অবকাঠামো, আইসিটি এবং উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থায়ন আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। গ্লোবাল ডিউ ডিলিজেন্স, স্ট্রাকচারিং ও উন্নয়ন–অর্থায়নে তাঁর অভিজ্ঞতা বিনিয়োগ খাতে তাঁকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে।

ফাইন্যান্সের পাশাপাশি গবেষণা ও নীতি–উন্নয়নেও রাখছেন অবদান। বিশ্বব্যাংকের “Digital Development and Skills Gap Analysis for Bangladesh” এবং এডিবির “Access to Digital Tools for Good Governance” গবেষণায় তাঁর বিশ্লেষণ গুরুত্ব পেয়েছে নীতিনির্ধারণী মহলে। ডিজিটাল দক্ষতা, সুশাসন ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন—এই তিন বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি স্বতন্ত্র ও বাস্তবমুখী।

বর্তমানে তিনি Fleek Bangladesh ও Wise Corporation–এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। পাশাপাশি ProMax Bangladesh Ltd. ও Duncan Bangladesh Ltd.–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ERP সফটওয়্যার, SaaS প্ল্যাটফর্ম, AI/ML সল্যুশন ও ফিনটেক টুলস উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে এসব প্রতিষ্ঠান দেশে কর্পোরেট অটোমেশন ও ডিজিটাল সেবার মান নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে।

এত ব্যস্ততার মাঝেও বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি সক্রিয় লেখালেখি করছেন। “সুদিন” নামে একটি উন্নয়ন–কেন্দ্রিক ম্যাগাজিনের প্রকাশক হিসেবে অর্থনীতি, নীতি–বিশ্লেষণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তি নিয়ে লেখালেখি করছেন নিয়মিত। পাশাপাশি জাতীয় দৈনিকগুলোতেও তাঁর বিশ্লেষণধর্মী লেখা পাঠকের আগ্রহ কাড়ে।
পেশাগত সাফল্যের বাইরে সৎ, পরিশ্রমী ও তরুণদের মেন্টর হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। তাঁর বিশ্বাস, “বাংলাদেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি—শিক্ষা, প্রযুক্তি আর ফাইন্যান্স-এই তিনের সমন্বয়েই ভবিষ্যৎ বদলাবে।”

আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং আধুনিক নেতৃত্বের মিশেলে শাহ কামাল আজ দেশের ফাইন্যান্স ও ফিনটেক খাতের এক বিশ্বস্ত নাম। সংশ্লিষ্টদের মতে, তাঁর মতো পেশাজীবীরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে প্রযুক্তি–নির্ভর অর্থনীতির ভিত্তি আরও শক্ত করবে—এটাই প্রত্যাশা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.