দেশের ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা বা তার বেশি পরিমাণ অর্থ জমা আছে এমন হিসাবের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এদিকে কোটি টাকার হিসাবধারীর সংখ্যা বাড়লেও কমেছে জমা টাকার পরিমাণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০টি। চলতি বছরের জুন শেষে হিসাব সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। সেই হিসাবে তিন মাসে ব্যাংক খাতের মোট হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৯টি। এ ছাড়া জুন প্রান্তিকে কোটি টাকার বেশি আমানত থাকা হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টি। আর সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭০টি। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ৭৩৪টি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের জুন শেষে কোটি টাকার হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। আর সেপ্টেম্বর শেষে এসব হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ২১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে এসব হিসাবে জমা কমেছে ৫৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।
২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এ আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে তা দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯৭৬ টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬ টি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে এবং সবশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ১ লাখ ২২ হাজার ৮১টি ছিল। এখন এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা এক ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.