চামড়া শিল্প পূর্ণ সম্ভাবনার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে: বিডা চেয়ারম্যান

চামড়া শিল্প এখনো পূর্ণ সম্ভাবনার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। সরকারি–বেসরকারি প্রচেষ্টা সমন্বয় করে চামড়া শিল্প আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিডা–নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

চামড়া শিল্প, জুতা তৈরির যন্ত্রপাতি, জুতার বিভিন্ন উপকরণ, রাসায়নিক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের সমাহার নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘লেদারটেক বাংলাদেশ’ শুরু হয়েছে। রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) এক্সপো ভিলেজে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এ আয়োজনের ১১তম আসরের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিডা–নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন–সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের শিল্প সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বিডা–নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, চামড়া শিল্প এখনো পূর্ণ সম্ভাবনার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। ‘লেদারটেক’ শুধু প্রদর্শনী নয়, বরং সম্ভাবনা বাস্তবায়নের চমৎকার প্রয়াস। সরকারি–বেসরকারি প্রচেষ্টা সমন্বয় করে চামড়া শিল্প আরও এগিয়ে যাবে।

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন–সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশ চামড়া শিল্পে রপ্তানি-ভিত্তিক উৎপাদন ত্বরান্বিত করার সন্ধিক্ষণে আছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ জোরদার হলে অগ্রগতি আরও দ্রুত হবে।

বিএফএলএলএফইএ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, চামড়াজাত পণ্য সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত। ‘লেদারটেক’ আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করছে।

এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড–ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া জানান, আটটি দেশের প্রায় ২০০ কোম্পানি প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। অংশ নিচ্ছে সিএলই, পিটিএ, ইফকোমা ও জিএসএমএ–এর পৃথক প্যাভিলিয়ন। প্রদর্শনীর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে এলএফএমইএবি।

১১ বছর আগে শুরু হওয়া ‘লেদারটেক বাংলাদেশ’ এখন চামড়া, জুতা ও সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্ভাবন ও বাজার সম্প্রসারণের নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এটি শিল্প উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করেছে।

তৈরি পোশাকের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত চামড়া ও জুতা শিল্প। বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের ৩ শতাংশ এবং বৈশ্বিক চাহিদার ১০ শতাংশ সরবরাহ করে বাংলাদেশ। শিল্পনীতি ২০২২–এ রপ্তানি বহুমুখীকরণের অগ্রাধিকার খাত হওয়ায়, খাতটি বৈশ্বিক উৎস হিসেবে নিজেদের শক্তিশালী করতে কাজ করছে।

ইপিবি–এর তথ্যমতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর শেষে খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৫৯১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের ৫৩৯.৪ মিলিয়ন ডলারের বেশি। অস্থিরতা কাটিয়ে খাতটি স্থিতিশীল হয়ে উঠছে।

‘লেদারটেক বাংলাদেশ ২০২৫’-এ প্রদর্শিত প্রযুক্তি, উপকরণ ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী উৎপাদন বাড়ানো, নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আনা বা নতুন করে বিনিয়োগের পরিকল্পনাকারীদের জন্য কার্যকর হবে। প্রদর্শনী চলবে ৪ থেকে ৬ ডিসেম্বর, প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। ব্যবসায়িক দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.