দেশে সাধারণ বীমা কোম্পানি হিসেবে পরিচিত নন-লাইফ বীমা কোম্পানির ব্যক্তি এজেন্ট কমিশন উঠে যাচ্ছে। শিগগিরই বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এরপর থেকে নন-লাইফ বীমা কোম্পানির প্রিমিয়ামের ওপর ব্যক্তি এজেন্টকে কোনো কমিশন দেওয়া যাবে না।
আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এক চিঠিতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ) ও দেশে ব্যবসারত সব নন-লাইফ বীমা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে।
ব্যক্তি পর্যায়ে এজেন্ট কমিশন উঠে গেলে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর আয় ও মুনাফা বাড়বে বলে সংশ।লিষ্টরা আশা করছেন।
চিঠি অনুসারে, নন-লাইফ বীমা কোম্পানির সব ব্যক্তি-এজেন্টের লাইসেন্স স্থগিত করা হবে। কোম্পানিগুলোকে আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের ব্যক্তি-এজেন্টদের তালিকা আইডিআরএ’র কাছে পাঠাতে হবে।
আইডিআরএ’র চিঠি থেকে জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও দেশের সব নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যক্তি এজেন্ট কমিশন শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনা ও ব্যক্তি-এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
লোকবল সংকটের কারণে ব্যক্তি- এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত ও শূন্য শতাংশ কমিশনের বিষয়টি মনিটর করার বিষয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনকে একটি ভিজিলেন্স টিম গঠন করতে হবে। কোনো নন-লাইফ বীমা কোম্পানি শূন্য শতাংশ এজেন্ট কমিশনের নির্দেশনা লংঘন করলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের ভিজিলেন্স টিম তা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বীমা আইন অনুসারে আইনলংঘনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
জানা গেছে, এতদিন আইনসম্মতভাবেই ব্যক্তি-এজেন্টদেরকে প্রিমিয়ামের উপর ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেওয়া যেতো।
বিমা খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যক্তি-এজেন্টদের কমিশন দেওয়ার বিষয়টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। প্রথমত: ব্যবসা ধরার জন্য অনেক কোম্পানির আইনে নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি হারে কমিশন দিতো ব্যক্তি এজেন্টদের। এতে এই খাতে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা গড়ে উঠে। প্রিমিয়ামের একটা বড় অংশ কমিশন হিসেবে চলে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া অনেক কোম্পানির অসাধু উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তারা কোম্পানির আয়কে ভিন্ন পথে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য এজেন্ট কমিশনের সুবিধার অপব্যবহার করে আসছে। ব্যক্তি এজেন্ট কমিশন শূন্য শতাংশ নির্ধারিত হলে বা ব্যক্তি এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত করা হলে অনিয়ম-দুর্নীতির একটি পথ অন্তত বন্ধ হবে। তাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কোম্পানির আয় ও মুনাফায়।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.