অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার জ্ঞানচর্চাকে আরও এগিয়ে নিতে ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। অর্থনীতি–বিটে নবীন সংবাদকর্মী, সাংবাদিক এবং গণযোগাযোগ–বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার লক্ষ্যেই বইটি সম্পাদনা করেছেন দেশের প্রথম বিজনেস অনলাইন নিউজ পোর্টাল অর্থসূচক’র সম্পাদক জিয়াউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর পল্টনের ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনলাইন পত্রিকা অর্থসূচক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো এবং নাগরিক প্ল্যাটফরমের আহবায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস’র সম্পাদক ও ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি শামসুল হক জাহিদ, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুল হক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক সচিব, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ও শিশুসাহিত্যিক জনাব ফারুক হোসেন।
বইটি সম্পাদনা করেছেন অনলাইন পত্রিকা অর্থসূচকের সম্পাদক, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব জিয়াউর রহমান।
বইটিতে দেশবরেণ্য কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, খ্যাতিমান সাংবাদিক ও একাডেমিশিয়ানের লেখা মূল্যবান নিবন্ধ অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। দেশের অন্যতম শীর্ষ সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা চন্দ্রাবতী একাডেমি গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উদ্বোধণ বক্তব্যে জিয়ারউর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক বিটের নবীন সংবাদকর্মীদের নিয়ে দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু ঘাটতি আছে। যদি তাদের জন্য একটা সহায়ক কিছু করা যায় তবে তারা আরো ভালো করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা জানি, অর্থনীতির আকার অনেক বড় হচ্ছে, ব্যবসায় অনেক ডাইনামিক আসছে। এখন অনেক নতুন নতুন মিডিয় আসছে। ফলে অর্থনৈতিক সংবাদ কর্মীদের অনেক চাহিদা বাড়ছে। সেই তুলনায় আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো তেমন দক্ষ সংবাদকর্মী দিতে পারছে না। অনেক বিশ্ববিদ্যলয়ে অর্থনৈতিক সংবাদিকতা এই কোর্সটাই নায়। এই বাস্তবতার আলোকে হটাৎ করে মাথায় আসল যে, এমন একটা কাজ করি তবে কেমন হয়। বইটি সম্পাদনা করতে গিয়ে, বিশিষ্ট্য অর্থনীতিবিদ ও সংবাদিকরা অসম্ভব রকমের সাড়া দিয়েছেন । আমি তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায়।
তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ বইটি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ব্যাংক খাতের গোপন খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি, পুঁজি ঘাটতি- সব সংকট একে একে সামনে আসছে। বিনিয়োগ স্থবির, নীতিগত স্বচ্ছতা কম এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার না থাকায় অর্থনীতি চাপে রয়েছে।
অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার জ্ঞানচর্চা আরও এগিয়ে নিতে ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর পল্টনের ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আয়োজন করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল অর্থসূচক।
দীর্ঘদিন ঢেকে রাখা খেলাপি ঋণের পাহাড়, প্রভিশনের গর্ত আর তারল্য সংকট- সব অসুখ এখন একে একে প্রকাশ্যে। এই বাস্তবতা তুলে ধরে দেশের নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা ও সংস্কারহীনতার সমালোচনা করেছেন তিনি। একসঙ্গে ধরা পড়া এসব দুর্বলতা বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তার অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া হঠাৎ বিদেশি বিনিয়োগ ঘোষণা ও নীতিগত অস্পষ্টতা বিনিয়োগ পরিবেশ আরও দুর্বল করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতির পথ রুদ্ধ করছে। একই সঙ্গে সংস্কার ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ আনা স্বপ্নের মতো বলেও জানান তিনি।
শামসুল হক জাহিদ বলেন, কেবল মাত্র অর্থনীতি সাংবাদিকরা গত কর্তৃত্ববাদী শাসন আমলে লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করে। লুটপাটের নিউজ প্রকাশ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাংবাদিকরা তার প্রতিবাদে গভর্নরকে বৈঠক করে সাহসিকতার পরিচয় রেখেছিল। এর মধ্যে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা অনেক দূর এগিয়েছে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ১৫ বছর পুঁজিবাজারে প্রায় ৫০ শতাংশ ডাউনের পরে আমরা আসা করেছিলাম। কিন্তু ইন্টারিমের মাত্র ৬ মাসের মধ্যে ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে।
মাহফুজুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এই বইটি খুবই কার্যকরী ও সহায়ক হবে।
ড. সাইফুল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মাত্র তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ কোর্স পড়ানো হয়। ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ বইটি পুরোপুরি একাডেমিক। এই বইটি খুবই ইউনিক হবে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য।
যাদের লেখায় সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা বইটি-
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। সম্মানীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ (সিপিডি)
ফারুক হোসেন। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ও লেখক, সাবেক সচিব
এম মাহফুজুর রহমান। সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক ও লেখক
ড. সেলিম রায়হান। অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নির্বাহী পরিচালক, সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিং (সানেম)
ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নির্বাহী চেয়ারম্যান, মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি
টিটু দত্ত গুপ্ত। উপ-সম্পাদক, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
সাওগাত আলী সাগর। সম্পাদক, সাপ্তাহিক নতুন দেশ, কানাডা ও সাবেক বিজনেস এডিটর, প্রথম আলো
শওকত হোসেন মাসুম। অনলাইন এডিটর, প্রথম আলো ও অর্থনীতি বিষয়ক গ্রন্থের লেখক
আসজাদুল কিবরিয়া। প্ল্যানিং এডিটর, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
আজিজুল ইসলাম। উপদেষ্টা সম্পাদক, ডেইলি বিজনেস মিরর
ড. সুবর্ণ বড়ুয়া। অধ্যাপক, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ডিপার্টমেন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শাহেদ সিদ্দিকী। সিনিয়র নিউজ এডিটর, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন
ফখরুল ইসলাম হারুন। বিশেষ প্রতিনিধি, প্রথম আলো ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ)
জিয়াউর রহমান। সম্পাদক, অর্থসূচক। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)
আবু হেনা মুহিব। সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক সমকাল
সোহেল পারভেজ। বিজনেস এডিটর, ডেইলি স্টার
মিরাজ আহমেদ চৌধুরী। সম্পাদক (বাংলা), গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিং জার্নালিজম নেটওয়ার্ক
এ কে এম জামীর উদ্দীন। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি শিক্ষার্থী
কাবেরী মৈত্রেয়। সাবেক সিনিয়র রিপোর্টার, একাত্তর টেলিভিশন
সোমা দেব। সহকারী অধ্যাপক, সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.