ফিলিস্তিন অঞ্চলে কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন ও ইসরায়েল সমর্থিত সহায়তা সংস্থা গাজা হিউম্যানটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। প্রায় ছয় সপ্তাহ কাজ করার পর সোমবার (২৪ নভেম্বর) সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা ‘জরুরি মিশন সফলভাবে সম্পন্ন’ করায় কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে। এ পর্যন্ত সংস্থাটি তিন মিলিয়নের বেশি প্যাকেজে ১৮৭ মিলিয়নের বেশি মিল সরবরাহ করেছে।
জিএইচএফ বলেছে, ছয় সপ্তাহ আগে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগেই তারা গাজার তিনটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত করেছিল। সংস্থা সরাসরি ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্য নিয়েছিল, তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা এ সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
জাতিসংঘের অভিযোগ, জিএইচএফ কেন্দ্রগুলোর কাছে খাদ্যের সন্ধানে ভিড় করা ফিলিস্তিনিদের অনেকেই ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলের দাবি, সেনারা সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছিল।
জিএইচএফ-এর নির্বাহী পরিচালক জন অ্যাক্রি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সিভিল-মিলিটারি কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (সিএমসিসি) জিএইচএফের মডেল গ্রহণ ও সম্প্রসারণ করবে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টমি পিগট বলেন, জিএইচএফ-এর মডেল হামাসকে ত্রাণ লুট থেকে বিরত রেখেছে এবং যুদ্ধবিরতি অর্জনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
হামাসের মুখপাত্র হাযেম কাসেম বলেন, জিএইচএফ ফিলিস্তিনিদের ক্ষতির জন্য দায়ী এবং এর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা উচিত। তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, জিএইচএফ যেন “গাজাবাসীর হতাহতের দায় এড়াতে না পারে” সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
গাজায় কার্যক্রম শুরু করে জিএইচএফ ২৬ মে, যখন ইসরায়েলের একতরফা অবরোধ আংশিক শিথিল হয়েছিল। সংস্থার খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলো মার্কিন বেসরকারি নিরাপত্তা ঠিকাদারদের মাধ্যমে পরিচালিত এবং ইসরায়েলি সামরিক অঞ্চলের ভেতরে অবস্থিত ছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানায়, ২৬ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত জিএইচএফ কেন্দ্রগুলোর কাছে খাবার আনতে গিয়ে কমপক্ষে ৮৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আরও ৫১৪ জন নিহত হয়েছেন জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ বহরের রুটের কাছাকাছি। জিএইচএফ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের পর জিএইচএফের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী ত্রাণ জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ হবে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক জানান, জিএইচএফ বন্ধ হওয়ায় তাদের ত্রাণ কার্যক্রমে প্রভাব পড়বে না। ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বেড়েছে, তবে এটি ২১ লাখ মানুষের প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট নয়।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.