চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত ফিলিপাইনের এক সাবেক মেয়র অ্যালিস গুওকে একটি জালিয়াতি কেন্দ্র পরিচালনার মাধ্যমে মানব পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে এবং আরও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২ মিলিয়ন পেসো জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ সাবেক মেয়র অ্যালিসের ছোট শহর বাম্বানে দেশের বৃহত্তম জালিয়াতি কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি উদঘাটন করার পর সাবেক মেয়র অ্যালিস গুওর মামলাটি বছরের পর বছর ধরে ফিলিপাইনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। অভিযানের পর প্রায় ৮০০ ফিলিপিনো এবং বিদেশিকে জালিয়াতি কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর সাবেক মেয়র গুওর বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনোর আড়ালে জালিয়াতি কেন্দ্র এবং মানব পাচার সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়।
৩৫ বছর বয়সী এই নারীকে গত বছর কয়েক সপ্তাহ ধরে পলাতক থাকার পর গ্রেফতার করা হয়। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি আপিল করতে পারবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। সাবেক মেয়র গুওর বিরুদ্ধে এখনো পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে একটিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
২০২২ সালে সাবেক মেয়র গুও রাজধানী ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত বাম্বানের মেয়র নির্বাচিত হন। বাম্বানের বাসিন্দারা আগে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন যত্নশীল ও সহানুভূতিশীল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি বড় জালিয়াতি কেন্দ্র উদঘাটন করার পর নীরব শহরটি আলোচনায় উঠে আসে।
কর্তৃপক্ষ সাবেক মেয়র গুওর জীবন কাহিনীতেও অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি ফিলিপাইনে জন্মেছেন, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি কিশোর বয়সে পরিবারসহ চীন থেকে এসেছেন। পরে তদন্তকারী সংসদ সদস্যরা দেখতে পান যে, তার আঙুলের ছাপ হুয়া পিং নামে একজন চীনা নাগরিকের সঙ্গে মিলে যায়।
এরপরেই তাকে দ্রুতই মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। মামলার আরো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের পর ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি নিখোঁজ হন। পরে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য চারটি দেশে আন্তর্জাতিক অভিযান শুরু হয়।
ওই অভিযানে ইন্দোনেশিয়া থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে গ্রেফতার করে ফিলিপাইনে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর তার ফিলিপাইনের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.