বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ১ সপ্তাহে সর্বনিম্নে

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) আগামী মাসে সুদহার কমানোর সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর প্রভাবে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম এক সপ্তাহের সর্বনিম্নে নেমে গেছে।

খবর গণমাধ্যম।

স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম দশমিক ৩ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৩৩ ডলার ২৯ সেন্টে নেমে এসেছে, যা ১০ নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন। এ সময় ফিউচার মার্কেটে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বেচাকেনা হয় ৪ হাজার ৩২ ডলার ৬০ সেন্টে। এটি আগেরদিনের তুলনায় ১ শতাংশ কম।

এ বিষয়ে ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, ‘ফেড কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন মন্তব্যে চলতি বছর সুদহার আর না কমানোর ইঙ্গিত পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে আগামী কয়েক প্রান্তিকে ফেড একাধিকবার সুদহার কমাতে পারে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যেও স্বর্ণ কেনার প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।’

সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ডিসেম্বরের বৈঠকে সুদহার কমানোর সম্ভাবনা বর্তমানে ৪৬ শতাংশের কিছু বেশি। আগের সপ্তাহে এটি ছিল ৬৭ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ সময় সরকারি অচলাবস্থা (শাটডাউন) বজায় ছিল। এতে গত সপ্তাহ পর্যন্ত দেশটিতে সরকারিভাবে অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ বন্ধ ছিল। তথ্য প্রকাশ পুনরায় শুরু হলে নীতিনির্ধারকদের জন্য ডিসেম্বরে সুদহার কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবে।

এর আগে সোমবার ফেডের ভাইস চেয়ারম্যান ফিলিপ জেফারসন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে “ধীরগতিতে এগোতে” হবে।’

উল্লেখ্য, ফেডের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী আজ প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল প্রকাশ হবে সেপ্টেম্বরের কৃষি ছাড়া অন্যান্য খাতের কর্মসংস্থানের তথ্য।

জুলিয়াস বেয়ারের বিশ্লেষক কারস্টেন মেঙ্কে বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখীই থাকতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে উঠেছ। পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়ার পূর্বাভাসও রয়েছে।’

বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ক্রমে বাড়ছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ধারাবাহিক ক্রয় ও স্বর্ণভিত্তিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) ঊর্ধ্বমুখী বিনিয়োগপ্রবাহ মূল্যবান ধাতুটির মূল্যবৃদ্ধির ধারাকে ত্বরান্বিত করছে। এসব কারণে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ ডলারে পৌঁছার পূর্বাভাস দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক মরগান স্ট্যানলি।

তবে ব্যাংকটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বর্ণের দাম কমার সম্ভাবনাও কিছুটা রয়েছে। মূল্য অস্থিতিশীলতার কারণে বিনিয়োগকারীরা অন্যান্য সম্পদে ঝুঁকতে পারেন। অথবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো স্বর্ণের রিজার্ভ হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

স্পট মার্কেটে গতকাল রুপার দাম আউন্সপ্রতি ৫০ ডলার ২০ সেন্টে স্থিতিশীল ছিল। এ সময় প্লাটিনামের দাম প্রায় দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৩৪ ডলার ২৯ সেন্টে। এছাড়া প্যালাডিয়াম আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৩৯৩ ডলার ৫৭ সেন্টে বেচাকেনা হয়েছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.