আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও রমজান মাসে ভোক্তা চাহিদা বাড়তে পারে- এ বিবেচনায় সাময়িকভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই সার্বিক বিশ্লেষণ শেষে নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির (এমপিসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশ নেন এমপিসির সদস্য ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান, চিফ ইকোনমিস্ট ড. মোহাম্মদ আখতার হোসেন, বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মাসুদা ইয়াসমিন, নির্বাহী পরিচালক ড. মো. এজাজুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব মাহমুদ সালাহউদ্দিন নাসের।
সভায় দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি প্রবণতা, ব্যাংকিং খাতের তারল্য, নীতি সুদহার, বিনিময় হার ও বৈদেশিক খাতের চাপসহ নানান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। কমিটি জানায়, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে- সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ সার্বিক মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশে, যা ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে কিছু এলাকায় খাদ্যপণ্যের সরবরাহব্যাঘাতের কারণে দাম বাড়ার আশঙ্কাও রয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, আন্তঃব্যাংক কলমানি ও রেপো হার সামান্য কমেছে। সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ বাড়ায় সুদের চাপে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে বেসরকারি খাতে ঋণচাহিদা কম, যার পেছনে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তার প্রভাব রয়েছে।
বৈদেশিক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মাঝারি থাকলেও আমদানি বেড়েছে। রমজানকে সামনে রেখে জরুরি পণ্যের এলসি মার্জিন শিথিল করায় আমদানি বৃদ্ধি স্বাভাবিক বলে কমিটি মনে করে। একই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহও শক্তিশালী ছিল। এছাড়া আবহাওয়াজনিত কারণে আমন ধানের ক্ষতি, নির্বাচন, রমজান এবং সম্ভাব্য নতুন বেতন কাঠামোর প্রভাবে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ আসতে পারে বলে সতর্ক করা হয়।
সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটি (এমপিসি) সিদ্ধান্ত নেয় নীতি সুদহার ১০ শতাংশই থাকবে। এসডিএফ হার ৮ শতাংশ এবং এসএলএফ হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ রাখা হবে।
কমিটি জানায়, প্রকৃত নীতিগত সুদহার ৩ শতাংশে পৌঁছানো পর্যন্ত কঠোর মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে, যাতে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে এবং মূল্যস্ফীতি আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.