বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে একীভূত পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএমবিএ)।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে পাঁচটি একীভূত ইসলামী ব্যাংকের সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারমূল্য ‘‘শূন্য” হিসেবে গণ্য করার ঘোষণা প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত ঘোষণায় সংশ্লিষ্ট শেয়ারহোল্ডারগণ গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করছেন।
আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা ও কর্তৃত্বকে শ্রদ্ধা জানাই। তবে দীর্ঘদিনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৈধ ও নিয়মমাফিক বিনিয়োগকৃত মূলধনকে একযোগে “শূন্য” হিসেবে ঘোষণা করা একটি কঠোর ও একতরফা সিদ্ধান্ত বলে আমরা মনে করি।
অনেক শেয়ারহোল্ডার দেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা রেখে নিয়মিতভাবে বিনিয়োগ করেছেন, সকল বিধি-বিধান মেনে চলেছেন। যথাযথ মূল্যায়ন, স্বতন্ত্র নিরীক্ষা এবং কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি ব্যতিরেকে এই সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করতে পারে। এই সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী এবং পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডাররা দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেছেন। তাই তাদের সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা যুক্তিসংগত নয়।
সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের সার্বিক দিক বিবেচনায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা যেতে পারে—
১. শেয়ারমূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়নের জন্য স্বতন্ত্র ও যুক্তিসংগত মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা।
২. চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে শেয়ারহোল্ডারদের মতামত ও ব্যাখ্যা উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া।
৩. একীভূতকরণ বা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে একটি ক্ষতিপূরণ বা সমন্বিত সমাধান কাঠামো বিবেচনা করা।
আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিষয়টি মানবিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার আলোকে পুনর্বিবেচনা করবেন। দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিনিয়োগকারীদের ন্যায্য অধিকারও সমানভাবে সংরক্ষণযোগ্য।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.